#এক_মুঠো_ভালোবাসা#১০ম_ও_শেষ_পর্ব
প্রায় তিন মাস পর ইয়াসির একটু একটু করে আমার কাছে আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে আম্মাসহ আমরা গ্রাম থেকে চলে এসেছি। সেদিন আবার মেসেজ আসলো, খুব সুন্দর মেসেজ,
"মানুষের জীবনটা বড়ই অদ্ভুত! জীবনের কোন এক গতিতে এসে কখন, কাকে, কীভাবে ভালো লেগে যায় বুঝে উঠতেই পারি না। সেই ভালোলাগা নীল জ্যোৎস্নাকে হার মানায়, হার মানায় উড়ন্ত প্রজাপতির সৌন্দর্য্যকে! ভালোবাসায় অপছন্দকে! ভালোলাগায় ভয়ঙ্কর গভীর রাতের নিস্তব্ধতাকে! কখনো জ্বলমলে রৌদ্রোজ্জ্বল ভোরকেও বিরক্তিতে ঢেকে দেয়! বিরক্তি আসে ঝুম বৃষ্টিতে প্রকৃতির ঝঙ্কার যখন শুধু বৃষ্টির শব্দই শুনা যায়। ভালোলাগা, ভালোবাসায় সব কিছু বদলে যায়, একদম সবই! ভালোবাসি, ভালোবাসি"
মেসেজটা পড়েই হঠাৎ করেই মাথায় আসলো এইসবইতো আমার আর ইয়াসিরের সাথে হচ্ছে বিয়ের পর থেকে। আমরা একে অপরের ভালোলাগা, মন্দলাগাকে এভাবে নিজেদের সত্ত্বার সাথে মিশিয়ে নিয়েছি। আসলে মিশিয়ে নিয়েছি বললে ভুল হবে, মিশে গেছে আপনা আপনিই! যেমনভাবে ইয়াসিরের আমার ভালোলাগাকে নিজের ভালোলাগার রুপান্তরিত হয়েছে। আমারও ইয়াসিরের মন্দলাগা গুলো নিজের অপছন্দে রুপান্তরিত হয়েছে। এই নীলক্ষেত তো অবশ্যই ইয়াসির! কিন্তু আমি উনার মুখ থেকেই শুনতে চাই।
আমিও রিপ্লে দিলাম,
--কে আপনি? কেন আমার সাথে লুকোচুরি খেলছেন?: তুমি কী সত্যি বুঝ না, আমি কে?
--বুঝতে চাই, জানতে চাই!
: মেসেজটা ভালো করে পড়, বুঝতে পারবে, জানতে পারবে! মেসেজেই আছে আমি কে?
--মেসেজের এত জটিল ভাষা আমি বুঝতে চাই না। আমি আপনার কাছ থেকেই জানতে চাই, আপনি কে?
: খাটের সাইড ড্রয়ার খোল, কিছু একটা পাবে।
সাইড ড্রয়ার খুলে একগুচ্ছ রজনীগন্ধা! সাথে একটা খাম। হাতে নিয়েই হৃদস্পন্দন দ্বীগুণ, তিনগুণ হারে বেড়ে যেতে লাগলো।
খামে একটা চিরকুট,
" ভালোবাসি তোমায়, যেমনভাবে তুমি ভালোবাসতে রজনীগন্ধাকে। রজনীগন্ধার প্রতিটি স্টিক সুন্দর, যদি একগুচ্ছ এক সাথে নেওয়া এই সৌন্দর্য্য সবকিছুকেই হার মানায়। যেমন তুমি, আমি আলাদাভাবে সুন্দর কিন্তু আমরা দুইজন মিলে পরিপূর্ণ, দ্বীনের পরিপূর্ণতা। এই পরিপূর্নতা সৌন্দর্য্য পৃথিবীর সব সোন্দর্য্যকে হার মানায়। তোমার ভালোলাগা তোমার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়!!!!"
খামে একটা চিরকুট,
" ভালোবাসি তোমায়, যেমনভাবে তুমি ভালোবাসতে রজনীগন্ধাকে। রজনীগন্ধার প্রতিটি স্টিক সুন্দর, যদি একগুচ্ছ এক সাথে নেওয়া এই সৌন্দর্য্য সবকিছুকেই হার মানায়। যেমন তুমি, আমি আলাদাভাবে সুন্দর কিন্তু আমরা দুইজন মিলে পরিপূর্ণ, দ্বীনের পরিপূর্ণতা। এই পরিপূর্নতা সৌন্দর্য্য পৃথিবীর সব সোন্দর্য্যকে হার মানায়। তোমার ভালোলাগা তোমার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়!!!!"
হ্যাঁ রজনীগন্ধা আমার প্রিয় ফুল! আমি চেয়েছিলাম বাসর রাতে আমাকে খুব রোমান্টিক কেউ এক গুচ্ছ রজনীগন্ধা গীফট করবে। কিন্তু আমাদের বাসর রাতটা সেইরকম কিছু হওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিলো না। আমি যে তাকে খুব আনস্মার্ট, আনরোমান্টিক কেউ মনে করেছিলাম।
কিন্তু তিনি আমাকে রজনীগন্ধা কেন দিলেন এই মুহুর্তে!? ইয়াসির কোথায়? এটা দ্বারা কী বুঝাতে চেয়েছেন।
এসব ভাবতে ভাবতে আবার মেসেজ,
"কিছু বলো"
রিপ্লে দিলাম,
-- কী করবো? আপনি কোথায়?
: মেসেজে ক্লো দেওয়া আছে তো!
এসব ভাবতে ভাবতে আবার মেসেজ,
"কিছু বলো"
রিপ্লে দিলাম,
-- কী করবো? আপনি কোথায়?
: মেসেজে ক্লো দেওয়া আছে তো!
মেসেজে ক্লো! আবার পড়লাম, তাহলে ইনি নীচে বাগানে। রজনীগন্ধা আমার বিয়ের কিছুদিন পর বাগানে লাগানো হয়েছে। যখন ইয়াসির রজনীগন্ধার গাছগুল লাগাচ্ছিলো, বেশ লাগছিলো। আর ইয়াসিরকে এতো সুন্দর লাগছিলো, এক অন্যরকম ভালোলাগা, সবুজের মাঝে এক দীর্ঘদেহী শুভ্র, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ! ভেবেছিলাম হয়ত এমনিতেই লাগেচ্ছে, কিন্তু আমার পছন্দকে সামনে রেখে লাগাবে ভাবতেই পারিনি।
নীচে নামতেই আবার খুব সুন্দর একটা গীফট বক্স তাতে সাইমুমের একটা বই "ধ্বংস টাওয়ার" বইয়ের সাথে একটা চিরকুট,
"আমি প্রতীক্ষায় আছি, আমাদের অংশের, আমাদের ভালোবাসার চিহ্নের, যেভাবে প্রতীক্ষা করি সাইমুমের প্রতিটি পর্বের জন্য। "
"আমি প্রতীক্ষায় আছি, আমাদের অংশের, আমাদের ভালোবাসার চিহ্নের, যেভাবে প্রতীক্ষা করি সাইমুমের প্রতিটি পর্বের জন্য। "
উফফ আবার রহস্য, যদিও আমি রহস্য উপন্যাস পড়তে পচণ্ড ভালোবাসি। কিন্তু এই মুহুর্তে রহস্য ভালো লাগছে না মোটেও! আমি এতোদিনে সাইমুম সিরিজের এই বইটি পর্যন্ত পড়েছি। যেখানে গল্পের নায়িকা মারিয়া জোসেফাইন প্রেগন্যান্ট।
আমি মেসেজ দিলাম।
--কিন্তু আপনি কোথায়?
: উফফ, তুমি মেসেজ পড় না?
--আবার ক্লো!
এখানে তো আমি কোন ক্লোই পাচ্ছি না। এখানে কী আবার বই কেন?। ভাবতে ভাবতে মাথায় আসলো, ইয়াসির কি স্টাডি রুমে?
উফফ এতো রহস্য কেন? তবে দারুণভাবে উপভোগ করছিলাম তার এই লুকোচুরি খেলাটা। আস্তে আস্তে স্টাডি রুমে ঢুকে টেবিলের সামনে যেতেই পিছন দিয়ে জড়িয়ে ধরলো। আমি চোখ বন্ধ করে উপভোগ করছিলাম। এই ভালোলাগা বলে বুঝানো যায় না। শুধু সমস্ত অস্তিত্ব মিশে এক সুখকর অনুভূতির ছোঁয়া দিয়ে যায়! সমস্ত রুম এক অপার্থিব পরিবেশ, ভালোলাগায়, ভালোবাসায় মিশ্রিত।
উফফ এতো রহস্য কেন? তবে দারুণভাবে উপভোগ করছিলাম তার এই লুকোচুরি খেলাটা। আস্তে আস্তে স্টাডি রুমে ঢুকে টেবিলের সামনে যেতেই পিছন দিয়ে জড়িয়ে ধরলো। আমি চোখ বন্ধ করে উপভোগ করছিলাম। এই ভালোলাগা বলে বুঝানো যায় না। শুধু সমস্ত অস্তিত্ব মিশে এক সুখকর অনুভূতির ছোঁয়া দিয়ে যায়! সমস্ত রুম এক অপার্থিব পরিবেশ, ভালোলাগায়, ভালোবাসায় মিশ্রিত।
কপট অভিমান করে বললাম,
--এতোদিন লুকোচুরি খেলেছ কেন?
: আমার রাগিণী বউটাকে আরো গভীরভাবে ভালোবাসতে! মেসেজ পাওয়া মূহুর্তে তোমার চেহারাটা দারুণ লাগে।
--তবে এখন বলেছ কেন?
: একটা সুসংবাদ আছে। এতো তাড়াতাড়ি বলতাম না। সুসংবাদ দেওয়ার জন্য বলছি!
--কী?
: আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কানাডা শিফট হবো।
--কিন্তু কেন?
: কারণ আলহামদুলিল্লাহ, পি এইচ ডি স্কলারশিপ পেয়েছি। দুইজনই পাড়ি জমাবো।
--এতোদিন লুকোচুরি খেলেছ কেন?
: আমার রাগিণী বউটাকে আরো গভীরভাবে ভালোবাসতে! মেসেজ পাওয়া মূহুর্তে তোমার চেহারাটা দারুণ লাগে।
--তবে এখন বলেছ কেন?
: একটা সুসংবাদ আছে। এতো তাড়াতাড়ি বলতাম না। সুসংবাদ দেওয়ার জন্য বলছি!
--কী?
: আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কানাডা শিফট হবো।
--কিন্তু কেন?
: কারণ আলহামদুলিল্লাহ, পি এইচ ডি স্কলারশিপ পেয়েছি। দুইজনই পাড়ি জমাবো।
আমি একপ্রকার চিৎকার করেই বললাম,
--কী বলছো? কীসের স্কলারশিপ?
তুমি তো হুজুর!
: জ্বী না, আমি হুজুর না!
--তাহলে তোমার এই লেবাস কেন?
: এই লেবাস হুজুরের নয়, মুসলমানের। মুসলমান পুরুষদের বাহ্যিক পরিচয় হলো দাড়ি আর টাকনুর উপর প্যান্ট। আর মহিলাদের বাহ্যিক পরিচয় হলো বোরখা!
--তবে মসজিদে আজান দাও কেন? কয়েকবার বলেছো ইমামতিও করেছো।
: আপাতত মোটামোটি ফ্রি ছিলাম, তাই এগুলো করছিলাম। ভালোলাগার আরেক জায়গা মসজিদ!
--কিন্তু এতোদিন বলনি কেন? কয়েকবার আনস্মার্ট হুজুর বলে তিরস্কারও করেছি কিছু বলনি কেন?
: সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছি।
আর কত প্রশ্ন করবে? আমি কী একটু হাগ পেতে পারি না।
--কী বলছো? কীসের স্কলারশিপ?
তুমি তো হুজুর!
: জ্বী না, আমি হুজুর না!
--তাহলে তোমার এই লেবাস কেন?
: এই লেবাস হুজুরের নয়, মুসলমানের। মুসলমান পুরুষদের বাহ্যিক পরিচয় হলো দাড়ি আর টাকনুর উপর প্যান্ট। আর মহিলাদের বাহ্যিক পরিচয় হলো বোরখা!
--তবে মসজিদে আজান দাও কেন? কয়েকবার বলেছো ইমামতিও করেছো।
: আপাতত মোটামোটি ফ্রি ছিলাম, তাই এগুলো করছিলাম। ভালোলাগার আরেক জায়গা মসজিদ!
--কিন্তু এতোদিন বলনি কেন? কয়েকবার আনস্মার্ট হুজুর বলে তিরস্কারও করেছি কিছু বলনি কেন?
: সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছি।
আর কত প্রশ্ন করবে? আমি কী একটু হাগ পেতে পারি না।
আমি পাথরের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। তাকে অভিনন্দন জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলেছিলাম। আপনি থেকে কখন তুমি করে বলেছি বুঝতেই পারিনি! কীভাবে, কী হলো?
আমি অধিক খুশিতে স্ট্রোক করবো মনে হচ্ছিলো। হুজুররা শুধু মাদ্রাসার শিক্ষক বা মুয়াজ্জিন হয় না, উচ্চ শিক্ষিতও হয়।
উচ্চ শিক্ষিতো হওয়া মানে নিজের ধর্ম, নিজেকে, স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া নয়। স্রষ্টাকে আরও ভালোভাবে জানা, উপলব্ধি করা। আমার ইয়াসির হুজুর নয়, একজন প্রেক্টিসিং মুসলমান।
আমি অধিক খুশিতে স্ট্রোক করবো মনে হচ্ছিলো। হুজুররা শুধু মাদ্রাসার শিক্ষক বা মুয়াজ্জিন হয় না, উচ্চ শিক্ষিতও হয়।
উচ্চ শিক্ষিতো হওয়া মানে নিজের ধর্ম, নিজেকে, স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া নয়। স্রষ্টাকে আরও ভালোভাবে জানা, উপলব্ধি করা। আমার ইয়াসির হুজুর নয়, একজন প্রেক্টিসিং মুসলমান।
আমি তাকে গভীর আবেগে জড়িয়ে ধরলাম। ঠিক যেখানে তার হৃদয়টা আছে সেখানে জায়গা করে নিলাম। আমি কী পেয়েছি? অবশ্য সে পি এইচ ডি হোল্ডার না হলেও আমার কোন দুঃখ ছিলো না। মনকে এভাবে বুঝাতে শিখে গেছি, আমার স্বামী যেমনই হউক তাতেই আমার মঙল। অঢেল টাকা না থাকলেও আমার দুঃখ নেই, অঢেল সুখ দিতে জানে একজন হুজুর। অঢেল ভালোভাসায় ভরিয়ে দিতে জানে। যদি অঢেল ভালোবাসা নাও থাকে তাতেও আফসোস না করতেও শিখে গেছি, সর্বাবস্থায় আল্লাহর শুকর করতে শিখে গেছি, কারণ দুনিয়ার অপূর্ণতাগুলো আখিরাতে পূরণ হবে জানি।
লেখা: Nilofa Nilo(উম্মে জাবির)
বি:দ্র: আন্তরিক দুঃখিতো এতো এতো দেরী করার জন্য। খুব বেশি বিজি ছিলাম। মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলাম।
ইন শা আল্লাহ পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায় #এবং_বিয়ে।
ইন শা আল্লাহ পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায় #এবং_বিয়ে।
tag ,
kolorober gojol badruzzaman kalarab kalarab tv holy tune gojol kalarab newainuddin al azad islamic bangla islamic salam kalarab kalarab shilpi gosthi new song 2017 kalarab allah allahmuhib khan 2018 allah boloabu rayhan 2018 holy tune record sabu rayhan islamic song kala movie ami dekhini tomay iqbal hj bangla islamic song 2017iqbal hossain jibon
0 coment rios: