রান্নাঘরে সব কিছু গুচাচ্ছি তখন তাইফ আসল পিছন থেকে ডাক দিল। হঠাৎ শরীরটা বেশ খারাপ লাগছিল৷আজকেও বমি করেছি মাথা ঝিমঝিম করছিল তাইফের ডাক শুনেই আমি মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নিলাম মাটিতে তাইফ এসে আমার কোমর শক্ত করে ধরল।আর শুনতে পাচ্ছি তাইফের কন্ঠ
-নুর কি হয়েছে আপনার??নুর,,৷,, নুর
যখন চোখ খুলি আমি নিজেকে বিছানাতে পেলাম সাথে আমার পরিচিত ডাক্তার হাফসা। হাফসা আমার চেকআপ করছে। সবদিকে চোখ ঘুরিয়ে ঘরে সবাই উপস্থিত৷। তাইফ ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করছে,,
-কি হয়েছে ওনার??
হাফসা আমার সম্পর্কে সব কিছুই জানে।তাই হাফসা তাইফকে আমার ফুল চেকআপ করবে সেটা বলে ঘর থেকে বের করে দেয়।
হাফসা সবাই ঘর থেকে যাওয়ার পর বলল
-শুন নুর এখন তোকে আমি যা বলব তোর শুনতে অপ্রীতিকর লাগতে পারে। আমি তোর ব্যপারে সব জানে তাই কথাটা তোকে আগে জানাতে চাই।
-কি হয়েছে আমার???আমি কি বেশিদিন বাচব না যদি এটা বলিস তাহলে বেশি শান্তি পাব।।
-চুপ থাক। এগুলো মুখে আনবি না। তুই এখন একা না।
-নুর কি হয়েছে আপনার??নুর,,৷,, নুর
যখন চোখ খুলি আমি নিজেকে বিছানাতে পেলাম সাথে আমার পরিচিত ডাক্তার হাফসা। হাফসা আমার চেকআপ করছে। সবদিকে চোখ ঘুরিয়ে ঘরে সবাই উপস্থিত৷। তাইফ ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করছে,,
-কি হয়েছে ওনার??
হাফসা আমার সম্পর্কে সব কিছুই জানে।তাই হাফসা তাইফকে আমার ফুল চেকআপ করবে সেটা বলে ঘর থেকে বের করে দেয়।
হাফসা সবাই ঘর থেকে যাওয়ার পর বলল
-শুন নুর এখন তোকে আমি যা বলব তোর শুনতে অপ্রীতিকর লাগতে পারে। আমি তোর ব্যপারে সব জানে তাই কথাটা তোকে আগে জানাতে চাই।
-কি হয়েছে আমার???আমি কি বেশিদিন বাচব না যদি এটা বলিস তাহলে বেশি শান্তি পাব।।
-চুপ থাক। এগুলো মুখে আনবি না। তুই এখন একা না।
-মানে!কি বলতে চাচ্ছিস??-কিভাবে বলি তুই মা হতে যাচ্ছিস।একটা মেয়ের জন্য এটা অনেক বড় খুশির সংবাদ কিন্তু তোর এখন যা অবস্থা কাল বিয়ে হল আজ প্রেগন্যান্ট।আমি বলি কি,,, তুই এবোরশন করে ফেল। নতুন সংসারআমি যেন হাফসার কথাশুনে তাল গাছ থেকে পড়লাম। ২মিনিটের জন্য বোবা হয়ে গিয়েছিলাম কি বলব! খুশিতে উল্লাস করব নাকি কান্না করব!কারন এটা তাইফের সন্তান না আলিফের সন্তান। আমি শুধু আমার পেটে হাত দিয়ে বসে আছি।হাফসা এদিকে বার বার এবোরশনের কথা বলছে। আমি কিছুক্ষন ওর কথার কোন উত্তর দিলাম না। এক পর্যায়ে হাফসা বলল-তাইফকে কিছু জানানো লাগবে না। তুই কাল আমার ক্লিনিকে আয় আমরা চুপিচুপি কাজটা করে দিব।নতুন সংসারটা সুন্দরভাবে কর। কাউকে বাধা হতে দিস না।
হঠাৎ আমার মধ্যে মনে হচ্ছিল হাফসার কথা শুনে বার বার বলছে -'মা,আমাকে মেরে ফেলবে?আমি কি পৃথিবী দেখব না?'তখনি আমি হাফসাকে বললাম
-নাহ।আমি ওকে কখনো মারব না। ও কি জানে?
-বোকামি করিস না।দুনিয়া কি বলবে প্রথম স্বামীর সন্তান পেটে নিয়ে দ্বিতীয় ঘরে এসেছিস?তোর বাচ্চার জন্য পর্যন্ত জীবনে এই অপবাদ নিয়ে বেচে থাকা কষ্টকর হবে।
আমি কিছুক্ষন নীরবতা ধারন করলাম। হাফসার কথাগুলো চরম বাস্তবতার কথা।একে তো সমাজে গায়ের রংয়ের জন্য আমার বঞ্চনার শেষ নেই তার উপর,,,,,
-আচ্ছা, নুর তোর কিছু সময় দরকার। তুই নে বেশি দেরি করিস না কালকের পরদিন আমি ফোন দিব। উত্তরটা জেনো 'হ্যা' হয়।।
আমি ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালাম।
হাফসা সবাইকে ব্লাড প্রেসার লো বলে চলে গেল।
আমি বিছানায় শুয়ে আছি।পেটের উপর হাত দিয়ে আদর করছি। জেনো ও বলছে --মা তোমার কোলে উঠব।কি আলাদা একটা অনুভতি। কিন্তু যত যাই হোক আলিফকে জানাতে হবে। হ্যা, জানাতেই হবে এটা ওর বাচ্চা।
তখনি ঘরে তাইফ, তনু আর তন্নি আসল।আমি তাইফকে দেখে উঠে বসে ঘোমটা নেওয়ার চেষ্টা করলাম। তন্নি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল।তনু আমার বিছানা থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে। বুঝে দেখাই যায় আমার প্রতি একটু হলেও মায়া হয়েছে। কিন্তু বলতে পারছে না সমাজ ওর মনে সৎ মা নামক এক জীবের ভয় ওর মনে ঢুকিয়ে দিয়েছে।।
কিছুক্ষন চুপ থাকার পর তাইফ জিজ্ঞেস করল
-কেমন আছেন?
-ভালো।
-এখন কি সুস্থবোধ করছেন??
-হুম
-কিছু কি খাবেন?
-না
-ঘোমটা দিয়েছেন কেন?এমনিতেই অসুস্থ। আমার সামনে কি আপনার পর্দা করা মানায়।
-আয়াদের তো পর্দা করতে হয়.
আমার কথা শোনার পর তাইফ তন্নি আর তনু কে ঘর থেকে যেতে বলল। ভালোই বুঝেছি কোন কটু কথা শোনাবে। কিন্তু আমি ঘোমটা তাইফের দিকে যাতে নজর না যায় তার জন্য দিয়েছি। কেমন একটা জানি অপরাধবোধ কাজ করছিল।
তনু আর তন্নি ঘর থেকে যেতেই তাইফ বলল
-আপনি এত কথা শোনান কেন?
-কি শোনালাম?
-আমি কি আপনাকে আয়া বলেছি কখনো?নিজেই যা ভাবেন তাই করেন নাকি!নিজের ভাবনাকে মাঝেমধ্যে প্রাধান্য দিতে হয় কিন্তু ভুল ভাবনাকে নয়।
-আমি কোন ভুল ভাবনাকে প্রাধন্য দিচ্ছি না। আপনি আমাকে কাল বলেছেন স্ত্রীর অধিকার দিতে রাজি নন। বাচ্চাদের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আমাকে এনেছেন। তাহলে স্ত্রীর মর্যাদাটুকু না দিতে পারলে আপনি তো আমার বেটার হাফ বা অর্ধেক নন। তাহলে আপনার সামনে পর্দা করতেই পারি।
-আপনি খুব জেদি তো। এত জেদ কিসের!
-কেন ছেলেরাই জেদ করতে পারে?!আর আমি মেয়ে উপর দিয়ে কালো দেখে তা পারব না
-আপনার সাথে তর্ক করতে পারব না। কিছু খাবার আনছি খেয়ে নিবেন।
-না খাব না।
-শুনুন আপনি দুর্বল। সব জায়গায় রাগ, জেদ ভালো না। নিজেকে কষ্ট দিয়ে তো কখনোই। আল্লাহ পাক আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আর তার সৃষ্টি করা শরীর আপ্নি অবমাননা করার কে?
তাইফ এই বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেল।
কিন্তু তাইফের এই কথায় যেন আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলাম। ঠিক ই তো এই বাচ্চাটা তো আল্লাহর দান। আমি ওকে মারার কে?
একটু পর তাইফ স্যুপ নিয়ে আসল আমার জন্য। স্যুপ আমাকে দিয়ে ও ঘর থেকে বের হয়ে গেল।
আমি স্যুপ টা পাশে রেখেই আমার ফোনটা হাতে নিলাম। আলিফকে জানানো দরকার। শুধু জানিয়ে ফোন কেটে দিব।
আলিফ আমার নাম্বার ধরবে না জানি কিন্তু আমার ফোনে নতুন সিম ঢুকিয়েছি। যখন আমার ডিভোর্স হয় আর তাইফের সাথে বিয়ে ঠিক হয় তখন সকল আত্মীয়ের মায়া উত্তলিয়ে উঠেছিল ঘন্টায় ঘন্টায় ফোন আসত তাই চেঞ্জ করেছি। আলিফের নাম্বারটা আমার মুখস্থ।। তাই নাম্বার বসিয়ে ফোন দিলাম
আলিফ অপরিচিত নাম্বার পেয়ে সাথে সাথে ধরল। অথচ আগে আমি ফোন দিয়ে মরে গেলেও ধরত না। আলিফ ওপাশ থেকে বলল
-হ্যালো
-হ্যালো আলিফ
-জ্বি আপনি কে?
তখনি তাইফ ঘরে ফলের প্লেট নিয়ে ঢুকল। আমি ওকে দেখে সাথে সাথে ফোন কেটে দিলাম। কেমন জানি একটা ভয় কাজ করছিল। কিন্তু এটা কিসের ভয় ছিল! তাইফ আমার হাতে ফল দিয়ে বলল
- স্যুপ খেয়ে খেয়ে নিয়েন
- ও মা হাত কাটল কি করে?
-না মানে ছুড়িতে ধার ছিল তাই ফল কাটতে গিয়ে কেটে গেল
-আপনি ফল কেটে নিয়ে এসেছেন? তাও আমার জন্য?
-হ্যা,শুনুন আমি অমানুষ নই।
তাইফের প্রতি আজ সম্মান বেড়ে গিয়েছিল তখনি সিদ্ধান্ত নিলাম ওকে সব জানাব এরপর এটা ওর ভাবনা ও আমার সাথে থাকবে কি না। কিন্তু আমি আমার বাচ্চাকে ছাড়ব না। তখনি ফোনে আলিফের ফোন আসল। ফোনের স্কিনে আলিফের নাম দেখে তাইফ সেটা দেখল। আমার দিকে তাকিয়েছিল
চলবে,,,,
আদিলা সুলতানা
আগের পর্ব
tag
kolorober gojol badruzzaman kalarab kalarab tv holy tune gojol kalarab newainuddin al azad islamic bangla islamic salam kalarab kalarab shilpi gosthi new song 2017 kalarab allah allahmuhib khan 2018 allah boloabu rayhan 2018 holy tune record sabu rayhan islamic song kala movie ami dekhini tomay iqbal hj bangla islamic song 2017iqbal hossain jibon
|
0 coment rios: