#২য়_পর্ব
-ভারী ঝগড়াটে তো আপনি আপ্নাকে যে রুম থেকে বের করে দিচ্ছি না এটাই অনেক।-দেন সমস্যা নেই আয়া তো আমি।-হয়েছে! আপনি খাটে ঘুমান আমি নিচে শুচ্ছি।আরেকটা সম্পর্ক জানি না কেমন হবে তাইফের দিকে তাকিয়েছিলাম।তাইফ রুমের বাতি অফ করে দিয়েছে। আর আমিও শুয়ে পড়লাম। তখনি কেন জানি মনে হল কোন বাচ্চা কান্না করছে।আমি ঘুম থেকে উঠে গুটি গুটি পায়ে ওদের ঘরে গেলাম। যেয়ে দেখি তন্নি ঘুমাচ্ছে আর তনু ফোন নিয়ে গুতাগুতি করছে আর কান্না করছে আর বলছে,'আম্মু তুমি কোথায়?আজকে বাবা আমাদের বকেছে ওই কালো সৎ মায়ের জন্য।'
তখনি মনে হল হয়ত ওদের মাকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু ধরছে না। আজিব! কোন মা তার বাচ্চারা ফোন দিলে কিভাবে না ধরে আছে?হয়ত আলিফের সাথে সুখেই আছে। যেটা আমি কখনো ছিলাম না। আমি নিজের অজান্তেই ওই বাচ্চা মেয়েটার কান্নায় কান্না করছিলাম। একেই মনে হয় বলে নাড়ীর টান। ওর সামনে যেয়ে যে ওকে আদর করব সেই সাহসটুকু পর্যন্ত ছিল না। একে তো সৎ মায়েরা খারাপ হয় তাদের ধারনা উপর দিয়ে আমি কালো দেখে আমাকে মনে হয় রাক্ষসই ভাবছে!তাই আমি আবার ঘরে চলে আসলাম। কিন্তু মেয়েটার কান্না দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল।তাই ঘরে এসেই লাইট ধরিয়ে দিলাম। এতে তাইফ বিরক্তবোধ করে ঘুম থেকে উঠে পড়ল।-কি হয়েছে?লাইট ধরিয়েছেন কেন??নিজের ঘুম না আসলে কি অন্যকেও ঘুমাতে দিবেন না??
-না মানে~ বলতে চাচ্ছিলাম
-এই এক সমস্যা এখন যত ঢং দেখাচ্ছেন
--শুনুন ঢং টা আপনি দেখাচ্ছেন। নিজের মেয়ে কান্না করছে আর আপনি মরা চিকার মত পড়ে ঘুমাচ্ছেন?
-আপনি আমাকে চিকা বললেন কেন?আর কে কান্না করছে? কেন??
-বাচ্চা মেয়ে মাকে না পাওয়ার কষ্টে হয়ত প্রতি রাতেই কান্না করে। আর আপনি বাবা হয়ে তা জানেন না?
-আমি কি করব?? আপনাকে তো এর জন্য এনেছি।নাহলে কি আমি আপনাকে,,,,
-হয়েছে বুঝেছি কালো পেত্নিকে কি আর বিয়ে করতেন এটাই বলবেন বুঝেছি। ওদের সাথে আপনার রক্তের সম্পর্ক মা নেই বাবা হয়ে যদি একটু সান্ত্বনা না দেন তাহলে আল্লাহ না করুক যত বড় হবে তত আপনার প্রতি ঘৃনা করবে। আমি তো আয়া ওদের আদর করতে পারি কিন্তু ভালোবাসা স্নেহ যেটা বাবা দিবে সেটা তো আমি দিতে পারব না।আর এত রাত্রে ওদের সামনে গেলে রাক্ষস ভাববে রাতটা কালো সাথে আমিও।আমাকে দেখে অজ্ঞান না হয়ে যায়!
তাইফ আমার কথা শুনে হো হো করে হাসছে।
- বেশ ভালো কথা বলতে পারেন।আচ্ছা আমি যাচ্ছি।
-যাওয়ার সময় যদি ওদের প্রিয় কোন খাবার ঘরে থাকে নেই যান৷ খুশি হবে।
-কাল আইস্ক্রিম এনেছিলাম সেটা নিব?
-নিবেন। আমি বলার কে?
-আচ্ছা আপনি এমন কেন??
-মানে??
-পরে বলছি ওদের কাছে থেকে এসে।
আমিও তাইফের পিছন পিছন গেলাম। দরজার বেশ আড়ালে দাড়ালাম।বাবা-মেয়ের খুনসুটি দেখছিলাম। কি চমৎকার দৃশ্য!
হঠাৎ দেখলাম তনু তার বাবাকে বললো
-বাবা ওই কালো সৎ মা চাই না। তুমি ওকে বাসা থেকে চলে যেতে বল।
-এটা বলতে হয় না, তনু।আল্লাহ রাগ হবে। ও খুব স্পেশাল তাই তোমাদের জন্য আল্লাহ পাঠিয়েছে।
-মানে কি বলছ বাবা??
-তুমি তো কোরআন পড় ওইখানে সব লেখা কোন কালিতে?
-কালো।
-কোরআনের কালি তো সবসময় কালো হয় তাই কালো স্পেশাল। আর তুমি যে কান্না কর তাই আল্লাহ এই স্পেশাল মানুষটা তোমাদের জন্য পাঠিয়েছে । অসম্মান করতে হয় না আল্লাহ রাগ হয়।
আমি তাইফের কথা শুনে কান্না করতে করতে ঘরে আসলাম।কেমন জানি এক আনন্দ হচ্ছিল। খুব ভালো লাগছিল কিন্তু কেন তা জানি না। এরপর তাইফ ঘরে আসল
বলল
-নামাজ পড়েন নাকি?
-জ্বি।
-আচ্ছা ঘুমান।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে শুয়ে পড়লাম। সকালে আমার হাতে একটা খুব বড় চিমটির ব্যথা অনুভব করলাম। আমি লাফ দিয়ে উঠে বসলাম চোখ মিলে দেখলাম তাইফ
-কি ব্যপার এটা কোন ধরনের অসভ্যতা??!
-আপনাকে এতক্ষন ধরে ডাকছি নুর,,,নুর বলে আপনি উঠছিলেন না। আর ফজরের নামাজের ওয়াক্ত যাচ্ছিল।
আমি তাইফের দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে আছি।দৃষ্টি পড়ছে না সকালের আলোতে ওকে সেই হ্যান্ডসাম লাগছে মাথায় টুপি।কিন্তু নুর এটা যে আমার নাম আমি আলিফের বাসায় বসে ভুলেই গিয়েছিলাম। আলিফ আমাকে এই মেয়ে,,, এই মেয়ে বলে সম্বোধন করত। বাকিরাও তাই। শুধু আলিফের বাবা আমাকে একটু সম্মান করত কিন্তু নুর বলে না বউ বলে ডাকত।
-ওহ আচ্ছা ধন্যবাদ নতুন জায়গাতো তাই ঘুম থেকে উঠতে পারছিলাম না। আর নুর বলে ডাকায় সাড়া দিতাম সেই ওই বিয়ের আগে। এখন তো নামটাই ভুলে গিয়েছি।
তাইফ আমার কথা শুনে রুম থেকে বের হয়ে গেল। আমি নামাজ শেষ করে ফ্রেশ হয়ে রান্নাঘরের দিকে যেতে নিলাম।তাইফের নিজস্ব ফ্লাট এটা। বেশ। তাইফ, তাইফের মেয়েরা,তাইফের মা,আর তার বোন থাকে।
রান্নাঘরে যাওয়ার সময় তাইফের সাথে সেই ধাক্কা একটা।তাইফ আমার দিকে না তাকিয়ে বকতে শুরু করল
-চোখে দেখেন না?যতসব।
-দুঃখিত।
তাইফ আমার দিকে তাকিয়ে চোখ বড় করে বলছে
-আরে এত বড় ঘোমটা কেন?বাসায় তো কোন পরপুরুষ নেই।আমাকে কি পরপুরুষ ভাবেন নাকি??
-না গত দুইবছরের অভ্যাস।
এটা বলেই আমি রান্নাঘরে চলে আসলাম।আসলে আমার খুব গরম লাগত ছোটবেলা হতেই।বাসায় তাই বাবা এসি লাগিয়েছিল।আলিফের বাসায় এসি নেই। কিন্তু আলিফ আর আলিফের মা বলত আমার চেহারা দেখলে নাকি দিন ভালো যায় না।তাই লং হাতার জামা মাথায় ঘোমটা পড়ে থাকতাম তাও যদি আলিফ খুশি হত। গরমে ছটফট করতাম তাও মুখ দিয়ে কিছু বলতাম না।
এইসব ভাবতেই রান্নাঘরে দেখি তাইফের মা এসেছে। তাকে দেখে
-আসসালামু আলাইকুম।আম্মা।
-ওয়ালুকুম আসসালাম।তুমি কি নতুন কাজের মেয়েটা??
তাইফের মায়ের কথাশুনেই বুঝলাম উনি আমাকে পছন্দ করে না।আর আমি তো আয়াই। তাই কিছুই উত্তর দিলাম না যে যা ভাবার ভাবুক।
কিছুক্ষণ পর বলল
-তুমি নুর না??.
-জ্বি।
-এত বড় ঘোমটা দেওয়ার কি হইছে?বাসায় তো তোমার স্বামীই ছেলে। আর তুমি এত রুপবান ও না যে তাইফের নজর লাগবে তোমার। যাই হোক বাসার সবার জন্য রুটি আর আলুভাজি বানাও।আজকে কাজের মেয়েটাও আসে নাই ভাগ্যিস তুমি আছ।
-জ্বি বানাচ্ছি।।
রান্নাঘরে রুটি বানাচ্ছি তখন তন্নি আর তনু আসল। তনু এসে আমার দিকে তাকিয়ে বলছে
-ঘোমটা দিয়েছ কেন??
-এম্নেই।
-সরি কাল তোমাকে বকা দিয়েছি।বাবা বলল তুমি নাকি স্পেশাল আল্লাহ পাঠিয়েছে। কিন্তু তোমাকে মামনি বলে ডাকতে পারব না। কি বলে ডাকব??..
এদিকে তন্নি বাটি থেকে কাচা রুটি নিয়ে খাচ্ছে। ও বলল
-তুমি তো বউ কি বলে ডাকব আম্মু।
আমি তন্নির কথা শুনে হাসছি ডাকছে মা তাও জিজ্ঞেস করছে কি বলে ডাকবে!
-আচ্ছা আমি তো কালো তোমরা আমাকে মামনি না বলে কালোমনি বলে ডাকো কেমন?
-আচ্ছা।।
টেবিলে সবার খাবার সাজিয়ে ডাক দিলাম। সবাই বসে রুটি আর ভাজি খাচ্ছে।আমি তন্নিকে খাওয়াচ্ছি।তনু আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-কালো মনি একটা রুটি দাও।।
তাইফ শুনে বলল
-এটা কেমন কথা?তনু
-উনিই তো বলেছেন।
-হ্যা, আমিই বলেছে।
-ভালা নামই তো দিয়েছে ওরা তাইফ।
-মা,,, কি যে বল?
-খাবার সময় কথা বলতে নেই আপনারা খান।
সবাই খেয়েদেয়ে উঠে গেল। আমার নজর তাইফের বোন রিনুর দিকে পড়ল। মাশাল্লাহ ওকে মোটা না আমার মতে স্বাস্থবান বলব।আর ও খাবার টেবিলে যেভাবে ফোনের দিকে তাকিয়েছিল তার মানে প্রেম করছে। সবাইকেই আমি একটু বুঝতে শুরু করেছি।
রান্নাঘরে সব কিছু গুচাচ্ছি তখন তাইফ আসল পিছন থেকে ডাক দিল। হঠাৎ শরীরটা বেশ খারাপ লাগছিল৷আজকেও বমি করেছি মাথা ঝিমঝিম করছিল তাইফের ডাক শুনেই আমি মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নিলাম মাটিতে তাইফ এসে আমার কোমর শক্ত করে ধরল।আর শুনতে পাচ্ছি তাইফের কন্ঠ
-নুর কি হয়েছে আপনার??নুর,,৷,, নুর
চলবে*****
আদিলা সুলতানা
রান্নাঘরে যাওয়ার সময় তাইফের সাথে সেই ধাক্কা একটা।তাইফ আমার দিকে না তাকিয়ে বকতে শুরু করল
-চোখে দেখেন না?যতসব।
-দুঃখিত।
তাইফ আমার দিকে তাকিয়ে চোখ বড় করে বলছে
-আরে এত বড় ঘোমটা কেন?বাসায় তো কোন পরপুরুষ নেই।আমাকে কি পরপুরুষ ভাবেন নাকি??
-না গত দুইবছরের অভ্যাস।
এটা বলেই আমি রান্নাঘরে চলে আসলাম।আসলে আমার খুব গরম লাগত ছোটবেলা হতেই।বাসায় তাই বাবা এসি লাগিয়েছিল।আলিফের বাসায় এসি নেই। কিন্তু আলিফ আর আলিফের মা বলত আমার চেহারা দেখলে নাকি দিন ভালো যায় না।তাই লং হাতার জামা মাথায় ঘোমটা পড়ে থাকতাম তাও যদি আলিফ খুশি হত। গরমে ছটফট করতাম তাও মুখ দিয়ে কিছু বলতাম না।
এইসব ভাবতেই রান্নাঘরে দেখি তাইফের মা এসেছে। তাকে দেখে
-আসসালামু আলাইকুম।আম্মা।
-ওয়ালুকুম আসসালাম।তুমি কি নতুন কাজের মেয়েটা??
তাইফের মায়ের কথাশুনেই বুঝলাম উনি আমাকে পছন্দ করে না।আর আমি তো আয়াই। তাই কিছুই উত্তর দিলাম না যে যা ভাবার ভাবুক।
কিছুক্ষণ পর বলল
-তুমি নুর না??.
-জ্বি।
-এত বড় ঘোমটা দেওয়ার কি হইছে?বাসায় তো তোমার স্বামীই ছেলে। আর তুমি এত রুপবান ও না যে তাইফের নজর লাগবে তোমার। যাই হোক বাসার সবার জন্য রুটি আর আলুভাজি বানাও।আজকে কাজের মেয়েটাও আসে নাই ভাগ্যিস তুমি আছ।
-জ্বি বানাচ্ছি।।
রান্নাঘরে রুটি বানাচ্ছি তখন তন্নি আর তনু আসল। তনু এসে আমার দিকে তাকিয়ে বলছে
-ঘোমটা দিয়েছ কেন??
-এম্নেই।
-সরি কাল তোমাকে বকা দিয়েছি।বাবা বলল তুমি নাকি স্পেশাল আল্লাহ পাঠিয়েছে। কিন্তু তোমাকে মামনি বলে ডাকতে পারব না। কি বলে ডাকব??..
এদিকে তন্নি বাটি থেকে কাচা রুটি নিয়ে খাচ্ছে। ও বলল
-তুমি তো বউ কি বলে ডাকব আম্মু।
আমি তন্নির কথা শুনে হাসছি ডাকছে মা তাও জিজ্ঞেস করছে কি বলে ডাকবে!
-আচ্ছা আমি তো কালো তোমরা আমাকে মামনি না বলে কালোমনি বলে ডাকো কেমন?
-আচ্ছা।।
টেবিলে সবার খাবার সাজিয়ে ডাক দিলাম। সবাই বসে রুটি আর ভাজি খাচ্ছে।আমি তন্নিকে খাওয়াচ্ছি।তনু আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-কালো মনি একটা রুটি দাও।।
তাইফ শুনে বলল
-এটা কেমন কথা?তনু
-উনিই তো বলেছেন।
-হ্যা, আমিই বলেছে।
-ভালা নামই তো দিয়েছে ওরা তাইফ।
-মা,,, কি যে বল?
-খাবার সময় কথা বলতে নেই আপনারা খান।
সবাই খেয়েদেয়ে উঠে গেল। আমার নজর তাইফের বোন রিনুর দিকে পড়ল। মাশাল্লাহ ওকে মোটা না আমার মতে স্বাস্থবান বলব।আর ও খাবার টেবিলে যেভাবে ফোনের দিকে তাকিয়েছিল তার মানে প্রেম করছে। সবাইকেই আমি একটু বুঝতে শুরু করেছি।
রান্নাঘরে সব কিছু গুচাচ্ছি তখন তাইফ আসল পিছন থেকে ডাক দিল। হঠাৎ শরীরটা বেশ খারাপ লাগছিল৷আজকেও বমি করেছি মাথা ঝিমঝিম করছিল তাইফের ডাক শুনেই আমি মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নিলাম মাটিতে তাইফ এসে আমার কোমর শক্ত করে ধরল।আর শুনতে পাচ্ছি তাইফের কন্ঠ
-নুর কি হয়েছে আপনার??নুর,,৷,, নুর
চলবে*****
আদিলা সুলতানা
tag
0 coment rios: