🌿 শাওয়ালের ৬ রোজা আগে রাখা যাবে নাকি কাযা রোজা আগে রাখতে হবে?
বিরতিহীন নাকি ভেঙে-ভেঙে রাখা যাবে?
৬ রোজায় কীভাবে ১ বছরের নেকি হয়?
➤ হাদিসের ভাষ্য এবং অধিকাংশ আলিমের মত হলো, যদি কেউ সারা বছর রোজার ফজিলত অর্জন করতে চায়, তবে প্রথমেই তাকে রামাদানের কাযা রোজাগুলো রাখতে হবে, এরপর শাওয়ালের ৬ টি রোজা রাখবে। কারণ হাদিসে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি রামাদানের রোজা রাখলো, অতঃপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখলো, সে যেন সারা বছর রোজা রাখলো।” [সহিহ মুসলিম: ১১৬৪]
.
খেয়াল করুন—হাদিসটিতে বলা হয়েছে প্রথমে রামাদানের রোজা রাখা, অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখা। সুতরাং, আগে রামাদানের রোযা পূর্ণ করতে হবে, এরপর শাওয়ালের রোজা রাখতে হবে। তাহলেই হাদিসে বর্ণিত প্রতিদান পাওয়া যাবে। তাছাড়া কাযা আদায় করা ফরজ, পক্ষান্তরে শাওয়ালের ৬ টি রোজা নফল। সুতরাং, নফলের উপর ফরজ স্বাভাবিকভাবেই অগ্রগণ্য হবে।
.
এই মতাবলম্বীদের একটি মত হলো, যদি এক রামাদানে কারো এত পরিমাণ কাযা হয়ে থাকে যে, সেগুলো রাখার পর শাওয়াল মাসের মধ্যে শাওয়ালের ৬ টি রোজা রাখা সম্ভব হবে না, তারা প্রথমে কাযা সমাপ্ত করবেন এবং পরবর্তী যুলক্বা’দাহ্ মাসে শাওয়ালের ৬ টি রোজা রাখবেন। যেহেতু তিনি অপারগ, তাই তার জন্য এই ছাড়।
.
➤ উলামায়ে আহনাফ এবং অন্যান্য অনেকের মতে, উত্তম হলো আগে কাযা রোজা সমাপ্ত করা, এরপর শাওয়ালের রোজা রাখা। তবে, কেউ চাইলে আগে শাওয়ালের রোজা রাখতে পারবে, এরপর সময়-সুযোগে কাযা রোজা রাখবে। তাঁরা উপরের হাদিসটির ব্যাপারে বলেন, এই হাদিসটিতে সুস্পষ্টভাবে এটা বলা হয়নি যে ‘আগে কাযা রোজাই রাখতে হবে’। তাঁরা আরেকটি দলিল দেন এক্ষেত্রে, তা হলো: সহিহ বুখারি ও মুসলিমে এসেছে, আয়িশা (রা.) রামাদানের কাযা রোজা শাবান মাসেও রেখেছেন। সুতরাং এটা ধারণা করা যায় যে, তিনি কাযা রোজা না রেখেই শাওয়ালের রোজা রেখেছেন।
.
✴ সিদ্ধান্ত: প্রথম কথা হলো, সর্বসম্মতভাবে আগে কাযা রোজা রাখা উত্তম। তবে, আগে শাওয়ালের রোজা রাখা যাবে কীনা তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। যাদের পক্ষে সম্ভব, তারা একটু কষ্ট হলেও আগে কাযা রোজা রেখে এরপর শাওয়ালের রোজা রাখুন। আর যাদের জন্য এটা কঠিন হয়ে যাবে, তারা চাইলে আগে শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখতে পারবেন। যেহেতু আয়িশা (রা.)-এর আমল ছিলো; তিনি কখনো কাযা রোজা শাবান মাসে রাখতেন—তাহলে অনুমান করা যায়—তিনি রামাদানের কাযা রোজা না রেখেই শাওয়ালের রোযা রাখতেন। আমরা বলব, যেহেতু সব আলেমের মতে, আগে কাযা রাখা ও পরে শাওয়ালের রোযা রাখা উত্তম, তাই সাধ্যানুযায়ী এভাবে আমল করে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকা ভালো।
.
➤ উত্তম হলো, রোজাগুলো বিরতিহীন রাখা; তবে মাঝখানে গ্যাপ দিলেও কোনো অসুবিধা নেই। (এ ব্যাপারে মোটামুটি সব আলেমই এমন মত দিয়েছেন।)
.
আল্লাহ্ বলেন, “আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, সে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে।” [সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫]
.
আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা কাযা পালনের ক্ষেত্রে বিরতিহীন রাখার শর্ত আরোপ করেননি। সুতরাং এতে প্রশস্ততা রয়েছে। [ফাতাওয়া শামি, আল-মাজমু’ লিন নাবাবি: ৬/১৬৭, আল মুগনি: ৪/৪০৮, ফাতাওয়া ইবনু বায: ১৫/৩৫]
.
➤ শাওয়ালের ছয়টি রোযা রাখা দ্বারা কীভাবে এক বছরের রোজা রাখার সমান সওয়াব হয়?
.
এর উত্তরে প্রথমেই আমাদের একটি সুত্র মনে রাখতে হবে, যেটি কুরআনে এসেছে—
.
مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا
.
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি একটি নেক আমল করলো, তার জন্য থাকবে দশগুণ প্রতিদান। [সূরা আন‘আম, আয়াত: ১৬০]
.
তাহলে রামাদানের ৩০ রোজা এবং শাওয়ালের ৬ রোজা (৩০+৬)= ৩৬ টি রোজা। যেহেতু প্রতিটি নেক আমল ১০ গুণ বাড়বে, সেহেতু (৩৬×১০) = ৩৬০ দিনের রোজা তথা এক চন্দ্রবছর।
.
সহিহ ইবনে খুজাইমার হাদিসে এসেছে, “রামাদান মাসের রোজা দশ মাসের সমান (এক মাস সমান দশ মাস) আর ছয় দিনের রোজা দুই মাসের সমান (৬×১০=৬০)। এভাবে এক বছরের রোজা হয়ে যায়।”
.
যাদের সামর্থ আছে, তাদের উচিত শাওয়ালের ৬ টি রোজা রাখা। এগুলো আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করবে ইনশাআল্লাহ্।
.
খেয়াল করুন—হাদিসটিতে বলা হয়েছে প্রথমে রামাদানের রোজা রাখা, অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখা। সুতরাং, আগে রামাদানের রোযা পূর্ণ করতে হবে, এরপর শাওয়ালের রোজা রাখতে হবে। তাহলেই হাদিসে বর্ণিত প্রতিদান পাওয়া যাবে। তাছাড়া কাযা আদায় করা ফরজ, পক্ষান্তরে শাওয়ালের ৬ টি রোজা নফল। সুতরাং, নফলের উপর ফরজ স্বাভাবিকভাবেই অগ্রগণ্য হবে।
.
এই মতাবলম্বীদের একটি মত হলো, যদি এক রামাদানে কারো এত পরিমাণ কাযা হয়ে থাকে যে, সেগুলো রাখার পর শাওয়াল মাসের মধ্যে শাওয়ালের ৬ টি রোজা রাখা সম্ভব হবে না, তারা প্রথমে কাযা সমাপ্ত করবেন এবং পরবর্তী যুলক্বা’দাহ্ মাসে শাওয়ালের ৬ টি রোজা রাখবেন। যেহেতু তিনি অপারগ, তাই তার জন্য এই ছাড়।
.
➤ উলামায়ে আহনাফ এবং অন্যান্য অনেকের মতে, উত্তম হলো আগে কাযা রোজা সমাপ্ত করা, এরপর শাওয়ালের রোজা রাখা। তবে, কেউ চাইলে আগে শাওয়ালের রোজা রাখতে পারবে, এরপর সময়-সুযোগে কাযা রোজা রাখবে। তাঁরা উপরের হাদিসটির ব্যাপারে বলেন, এই হাদিসটিতে সুস্পষ্টভাবে এটা বলা হয়নি যে ‘আগে কাযা রোজাই রাখতে হবে’। তাঁরা আরেকটি দলিল দেন এক্ষেত্রে, তা হলো: সহিহ বুখারি ও মুসলিমে এসেছে, আয়িশা (রা.) রামাদানের কাযা রোজা শাবান মাসেও রেখেছেন। সুতরাং এটা ধারণা করা যায় যে, তিনি কাযা রোজা না রেখেই শাওয়ালের রোজা রেখেছেন।
.
✴ সিদ্ধান্ত: প্রথম কথা হলো, সর্বসম্মতভাবে আগে কাযা রোজা রাখা উত্তম। তবে, আগে শাওয়ালের রোজা রাখা যাবে কীনা তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। যাদের পক্ষে সম্ভব, তারা একটু কষ্ট হলেও আগে কাযা রোজা রেখে এরপর শাওয়ালের রোজা রাখুন। আর যাদের জন্য এটা কঠিন হয়ে যাবে, তারা চাইলে আগে শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখতে পারবেন। যেহেতু আয়িশা (রা.)-এর আমল ছিলো; তিনি কখনো কাযা রোজা শাবান মাসে রাখতেন—তাহলে অনুমান করা যায়—তিনি রামাদানের কাযা রোজা না রেখেই শাওয়ালের রোযা রাখতেন। আমরা বলব, যেহেতু সব আলেমের মতে, আগে কাযা রাখা ও পরে শাওয়ালের রোযা রাখা উত্তম, তাই সাধ্যানুযায়ী এভাবে আমল করে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকা ভালো।
.
➤ উত্তম হলো, রোজাগুলো বিরতিহীন রাখা; তবে মাঝখানে গ্যাপ দিলেও কোনো অসুবিধা নেই। (এ ব্যাপারে মোটামুটি সব আলেমই এমন মত দিয়েছেন।)
.
আল্লাহ্ বলেন, “আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, সে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে।” [সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫]
.
আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা কাযা পালনের ক্ষেত্রে বিরতিহীন রাখার শর্ত আরোপ করেননি। সুতরাং এতে প্রশস্ততা রয়েছে। [ফাতাওয়া শামি, আল-মাজমু’ লিন নাবাবি: ৬/১৬৭, আল মুগনি: ৪/৪০৮, ফাতাওয়া ইবনু বায: ১৫/৩৫]
.
➤ শাওয়ালের ছয়টি রোযা রাখা দ্বারা কীভাবে এক বছরের রোজা রাখার সমান সওয়াব হয়?
.
এর উত্তরে প্রথমেই আমাদের একটি সুত্র মনে রাখতে হবে, যেটি কুরআনে এসেছে—
.
مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا
.
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি একটি নেক আমল করলো, তার জন্য থাকবে দশগুণ প্রতিদান। [সূরা আন‘আম, আয়াত: ১৬০]
.
তাহলে রামাদানের ৩০ রোজা এবং শাওয়ালের ৬ রোজা (৩০+৬)= ৩৬ টি রোজা। যেহেতু প্রতিটি নেক আমল ১০ গুণ বাড়বে, সেহেতু (৩৬×১০) = ৩৬০ দিনের রোজা তথা এক চন্দ্রবছর।
.
সহিহ ইবনে খুজাইমার হাদিসে এসেছে, “রামাদান মাসের রোজা দশ মাসের সমান (এক মাস সমান দশ মাস) আর ছয় দিনের রোজা দুই মাসের সমান (৬×১০=৬০)। এভাবে এক বছরের রোজা হয়ে যায়।”
.
যাদের সামর্থ আছে, তাদের উচিত শাওয়ালের ৬ টি রোজা রাখা। এগুলো আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করবে ইনশাআল্লাহ্।
Courtesy: Tasbeeh
0 coment rios: