চেহারার পর্দা ব্যাপারে কোরআন কি বলে?
(১)
কোরআনে কোথাও নাকি চেহারার পর্দার কথা বলা হয়নি!!
ন্যূনতম বিবেক-বুদ্ধি খাটালেই ধারনা হয়ে যাবে কোরআনে কেমন পর্দার ব্যাপারে হুকুম এসেছে.... নারীর অন্যান্য অংগের চেয়ে চোখের বিভিন্ন কবি সাহিত্ যিকদের লেখায় "চোখ" ও "ঠোটের বর্ণনা এসছে সবচেয়ে বেশি! যেখানে কাম ও বাসনা সবচেয়ে বেশি ঘৃনিত ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে! তাহলে মুখের পর্দা কেন করবেন না?? একজন বেগানা পুরুষ যাতে আমার বা আপনার সুন্দর চোখ, ঠোট দেখে আবারো নতুন কবিতা লিখে জাহান্নামের ভাগীদের হতে পারে তাই?
চেহারার পর্দা সম্পর্কে #কোরআনের_১ম_দলিলঃ-
.
"হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে,কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন,তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজদের উপর টেনে দেয়,এতে তাদের চেনা সহজ হবে,ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না,আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু!"
(সূরা আহযাবঃ৫৯)
.
এই আয়াতে স্পষ্ট ভাবে চেহারার পর্দার কথা বলা হয়েছে,
'চাদরের কিয়দাংশ নিজের উপর টেনে দেয়' -বাক্যটিই প্রমান করে এখানে গায়ের চাদরের কিছু অংশ মুখের উপর টেনে দেয়ার কথা বলা হয়েছে..
•
#কোরআন_থেকে_২য়_দলিলঃ-
.
".... তারা যেন যা সাধারনত প্রকাশ্যমান তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে..."
(সূরা আন নূরঃ৩১)
.
এই আয়াতটির ভুল ব্যাখ্যা করে অনেকে মুখ খোলা রাখার ব্যাপারে যুক্তি দেখান,কারন এখানে বলা হয়েছে যা সাধারনত প্রকাশমান!
সুতরাং তারা চেহারা কে প্রকাশ্য বস্তু ধরে নিয়েছে!
অথচ যা দৃশ্যত প্রকাশমান বলতে নারীর দৈর্ঘ ও খর্বতা,কৃশতা ও স্থুলতা,বাতাসের দোলে বোরকার নিচের পোশাক বা দেহের কোন অংশ দেখা যাওয়া কে বুঝানো হয়েছে..
অর্থাৎ নারীর সৌন্দর্যের কোন কিছু অনিচ্ছায় প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টি পর্দার হুকুম থেকে বিয়োজ্য..
সেজন্যই উক্ত আয়াতে আল্লাহ 'নারী নিজে যা প্রকাশ করে' কথাটি বলেননি,
বলেছেন, যে সৌন্দর্য নারীর স্বেচ্ছা সম্পাদন ব্যতীত এমনিতেই প্রকাশিত হয়ে যায়!
সুতরাং হাত,মুখ,পা এগুলোও পর্দার অন্তর্ভুক্ত..
•
#কোরআন_থেকে_৩য়_দলিলঃ-
.
আল্লাহ ইরশাদ করেন,
'মুমিনদের বলুন,তারা যেন তাদের দৃষ্টি কে নত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হিফাযত করে,এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে,নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন!'
(সূরা নূরঃ৩০)
.
প্রতিটি বিবেকবান ব্যক্তিই বুঝবে এই আয়াতে কি বুঝানো হয়েছে..
নারীর চেহারা পর্দামুক্ত রাখার অর্থই হল তারা যেন পুরুষদেরকে তাদের দেখার প্রতি আমন্ত্রন জানাচ্ছে!
•
#কোরআন_থেকে_৪র্থ_দলিলঃ-
.
এই আয়াতের পরবর্তী আয়াতেই কি বলা হয়েছে মিলানোর চেষ্টা করুন...
'ঈমানদার নারীদের বলুন,তারা যেন তাদের দৃষ্টি কে নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে,এবং সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে!'
(সূরা নূরঃ৩১)
.
প্রথমে পুরুষদের দৃষ্টি নত রাখতে বলা হয়েছে,পরবর্তী আয়াতেই নারীর সৌন্দর্য প্রদর্শন করতে নিষেধ করা হয়েছে...
মানে কি দাঁড়াল?
আপনি সৌন্দর্য প্রদর্শন করলে পুরুষ রা তাকাবেই,তাই নারীর পর্দা পুরুষদেরকে তাদের দৃষ্টি অবনত রাখতে সাহায্য করবে...
•
#কোরআন_থেকে_৫ম_দলিলঃ-
.
দেখুন কোরআন আমাদের জন্য কি সুন্দর পবিত্রতা বর্ণনা করছে!
'তারা যেন তাদের গোপন সাজসজ্জা প্রকাশের জন্য জোরে পদচারণা না করে!'
(সূরা নূরঃ৩১)
.
নারীর জন্য পায়েল বা নুপুরের শব্দ নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়া হারাম,
নুপুরের রিনিঝিনি শব্দ পুরুষের মনে ফিতনার উদ্রেগ ঘটাতে পারে,
নারীর জন্য যেহেতু শব্দ তোলে এমন কিছু পরিধান করার বৈধতা টুকুও নেই,
তাহলে চেহারা খোলা রাখা বৈধ হয় কিভাবে?
•
#কোরআন_থেকে_৬ষ্ঠ_দলিলঃ -
.
আল্লাহ ইরশাদ করেন,
'তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে,মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবেনা.....'
(সূরা আহযাবঃ৩৩)
.
যদিও জাহিলী যুগের নারীরা অধুনা বিশ্বের নারীদের মত বাহু,কাঁধ,বক্ষ,পিঠ,উরু উন্মুক্ত করে চলত না,
তারা কেবল চেহারা খোলা রাখত,বড়জোর চুল বের করে চলত,তদুপরি অজ্ঞতার যুগের অধিকাংশ নারীই চেহারা পর্দাবৃত রাখত,
সেকালের কাব্য সাহিত্য থেকে এমনটিই জানা যায়!
এরপরও আল্লাহ ইরশাদ করেন 'অজ্ঞতা যুগের অনুরূপ নিজেদের প্রদর্শন করবে না'
•
#কোরআন_থেকে_৭ম_দলিলঃ-
.
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
'তোমরা তার (নবী) পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে,এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারন!'
(সূরা আহযাবঃ৫৩)
.
আয়াত টি চেহারার পর্দার আবশ্যিকতার ব্যাপারে সুস্পষ্ট দলিল,
এখানে নবী পত্নীদের সম্মোধন করা হলেও তা উম্মতের জন্য ব্যাপকভাবে প্রযোজ্য..
........কেননা.....
আমরা সকলেই জানি নবী পত্নীগণ ছিলেন সকল উম্মতের মা,
এমনকি তাঁদের বিবাহ করা হারাম ছিল..
উম্মতের মা হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্যও পর্দার হুকুম কঠোর ছিল,
সাহাবায়ে কেরামগণ (রা) দের সামনে আসাও নিষেধ ছিল!
সাহাবায়ে কেরামগণ (রা) উম্মুল মুমিনীনের (রা) এর সাথে কথা বলার প্রয়োজন হলেও যেন পর্দার আড়াল থেকে কথা বলে এজন্যই উক্ত আয়াত নাযিল হয়েছে!
অথচ ঈমান আখলাকের দিক থেকে সাহাবা (রা) গণ কত উচ্চ পর্যায়ের ছিলেন!
তাদের জন্যও যদি পর্দার হুকুম এত স্ট্রং হয়,
তবে এযুগে যেখানে আপন পিতার দ্বারা কন্যা ধর্ষিত হয়!
আপন ভাইয়ের দ্বারা বোন ধর্ষিত হয়!
আপন মামা দ্বারা ভাগ্নী ধর্ষিত হয়!
সেখানে পর্দার হুকুম আরও কত স্ট্রং তা পাগল মাত্রও বুঝবে...
সংগ্রহীত
0 coment rios: