শনিবার

বেটারহাফ_ফরেভার (পর্ব- ০৬) | একটি ইসলামিক গল্প

#বেটারহাফ_ফরেভার (পর্ব- ০৬)

ইয়াদের মা ছেলেকে বুঝানোর চেষ্টা করতেছে যে,তারা মেয়েকে না দিতে চাইলে এখন কি আর করার...!!! ভুলে যা না.....অমন মেয়ে আরো কত্ত আছে....!!!

কিন্তু নাহ...!!! সিনহা একটাই।ইয়াদের কাছে ওর মত মেয়ে আর একটাও নেই....!!! তাই সিনহাকেই চাই ইয়াদের।নইলে ও সত্যি মরে যাবে....!!!
পাগলের মত কাদতেছিল ইয়াদ...!!! ইয়াদের মা ছেলের এই কান্নাটা সহ্য করতে পারে নি।লাস্ট সেই ছোট বেলায় এভাবে কেঁদেছিল ইয়াদ।মা মেরেছিল তাই।তারপর তো আর মা এভাবে ওকে কাঁদতে দেখে নি কখনো..... আজ ও এভাবে কাঁদছে ; তাও সিনহার জন্য...!!!
মা কি করবে বুঝতে পারছিল না।অনেকভাবে ছেলেকে বুঝিয়েও লাভ হল না কোনো।ছেলের এমন কান্না দেখে উনিও কেঁদে দিলেন....!!!
ফোন করলেন সিনহাদের বাসায়।ফোন ধরল সিনহার বাবা,,,

ইয়াদের মা:ভাই,,,আমার ছেলেটাকে পাগল বানাবেন না প্লিজ।সিনহাকে বিয়ে করতে না পারলে  ও হয়তো পাগল হবে নয়তো মরে যাবে....!!! (কেঁদে কেঁদে বললেন)

উনার কান্না শুনে সিনহার বাবা তো টাস্কি খেয়ে গেলেন....!!!

সিনহার বাবা:ভাবি,,,কান্না থামিয়ে কথা বলুন....

ইয়াদের মা কান্না একটু কন্ট্রোলে এনে বললেন,,,

ইয়াদের মা:ভাই,,,ইয়াদ প্রচুর কান্না করতেছে....!!! বড় হওয়ার পর কখনো ও এভাবে কাদে নি ভাই।প্লিজ ভাই,,আপনার মেয়েটাকে ভিক্ষা দিন😓

সিনহার বাবা:দেখেন ভাবি,,,আপনার ছেলেকে কোনো সুযোগ না দিয়ে কিন্তু এরকম ডিসিশন নিচ্ছি না আমি। টাইম কিন্তু অনেক দিছিলাম।কিন্তু কাজে লাগায় নি সে। এটা কি আমাদের দোষ বলুন....!!! ও ছোট মানুষ। আবেগটা একটু বেশি।তাই এমন কান্নাকাটি করতেছে এখন।কিছুদিন গেলে একাই ঠিক হয়ে  যাবে.....

ইয়াদের মা  যেন আর কিছু বলতে পারলেন না।কিছু না বলেই ফোন কেটে দিলেন।
ইয়াদ রাতে আর কিছু খেল না।পরের দিন অনেক ভোরে উঠল ইয়াদ।যদিও আজ সিনহা ডেকে দেয় নি।ফজরের নামাজ টা পরেই বাইক নিয়ে চলে গেল সিনহাদের বাসায়।সিনহার বাবা তখন সবে মাত্র মসজিদ থেকে বাসায় ফিরে রেস্ট নিতে নিতে চা খাচ্ছিলেন....।।  গেটটা খোলাই ছিল।অফ করাও হয় নি......
ইয়াদ সরাসরি বাসায় ঢুকে কাঁদতে কাঁদতে সরাসরি সিনহার বাবার পায়ে গিয়ে ধরল....!!!!

ইয়াদ:বাবা,,,দোহাই লাগে বাবা।আপনার মেয়েটাকে ভিক্ষা দিন বাবা।ওকে ছাড়া আমি সত্যিই বাচব না😭

সিনহার বাবা:আরে আরে,,,কি করছ এসব...!!!   পা ছাড়ো......!!! আগে উঠো....!!!

ইয়াদ:না বাবা,,,আগে বলেন সিনহাকে দিবেন আপনি।তারপর উঠব....বাবা,,,একটু দয়া করুন বাবা....!!!😭

বাবা:আরে বাবা,,,আগে তো উঠো....!!! তারপর কথা বলছি.....

বাবা একপ্রকার জোর করেই ইয়াদকে উঠিয়ে সোফায় বসালেন।ইয়াদ মাথা নিচের দিকে দিয়ে কেদেই চলেছে বাচ্চাদের মত।ওদিকে ইয়াদের গলার আওয়াজ শুনে সিনহা তাড়াতাড়ি ড্রইং রুমে এসেই দেখে ইয়াদ সিনহার বাবার পা ধরে আছে।সিনহার মা সিনহাকে ইশারা করল ভিতরে চলে যেতে।সিনহা ভিতরে চলে গেল।ওর খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছিল ড্রইং রুমে কি হচ্ছে....!!! কিন্তু ওদিকে গেলেই যে মা বকুনি দেবে...!!! যেতে পারছে না।মন ছটফট করছে....!!!

তো,,,ইয়াদের এমন পাগলামি দেখে সিনহার বাবা বললেন যে,,,

বাবা:দেখো বাবা ইয়াদ,,,তোমাদের এই বয়সটা আবেগের।সবে মাত্র ভার্সিটি লাইফে পা দিয়েছ।লাইফের অনেকটা পথই এখনও বাকি।আর তুমি এখন যে আবেগের মধ্যে আছো সে আবেগটা নরমালি বেশিদিন থাকে না বাবা।আমি জানি না আমার মেয়ের জন্য তুমি কেন এমন পাগলামি করছ...!!! তবে যেটাই হোক,,,তোমরা দুইজন যে দুই কোয়ালিটির এটা কিন্তু সত্য....আর স্বামী-স্ত্রী দুজন দু কোয়ালিটির হলে সংসার সুখের হয় না বাবা।ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকে।আর তোমরা সেম এইজের।বিবাহিত জীবনে এই জিনিষ টাও সমস্যার মধ্যে পরে।সেম এইজের হলে বুঝাপড়ায় সমস্যা হয়।তাই বাবা,,,তোমাকে বলছি,,, এমন পাগলামি কর না প্লিজ.....☺কিছুদিন গেলে সব এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ.....

ইয়াদ এতক্ষন মাথা  নিচের দিকে  দিয়ে কাঁদছিল আর কথা গুলো শুনছিল।এবার ও বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,,,বাবা,,,একটা বার সিনহাকে  একটু  আমার সামনে আনতে পারবেন প্লিজ।জাস্ট একটাবার.......

বাবা:কেন...??? কি করবে...???
ইয়াদ:প্লিজ.....একটু কথা আছে।জাস্ট ২ মিনিট......

সিনহার বাবা কি যেন একটা ভাবলেন।তারপর সিনহার মাকে বললেন,,,

বাবা:সিনহাকে রেডি হয়ে আসতে বল তো.....

সিনহার মা সিনহার রুমে গিয়ে বললেন,,,

মা:তাড়াতাড়ি বোরকা, হিজাব পড়।ইয়াদ তোর সাথে একটু কথা বলতে চায় ২ মিনিটের জন্য.....

সিনহা:আচ্ছা মা,,তুমি যাও। আমি আসছি😞

সিনহার মা ড্রইং রুমে গিয়ে বললেন,,সিনহা রেডি হয়ে আসছে.....

ওদিকে ইয়াদ বাবাকে বললেন,,,

ইয়াদ:সিনহা তাহলে রেডি হোক।আমি ২ মিনিটের মধ্যে আসছি।আমার বাইকে একটা জিনিষ রাখা আছে।একটু নিয়ে আসব

বাবা:কি জিনিশ??

ইয়াদ:সেটা না হয় পরেই দেখাচ্ছি...

বাবা:আচ্ছা যাও☺

ইয়াদ দৌড়ে গেল আর আসল।হাতে ওর কিচ্ছু নেই।এর মধ্যে সিনহাও বোরকা পরে চলে আসছে।ইয়াদ বাসায় ঢুকে সরাসরি সিনহার কাছে গিয়ে পকেট থেকে একটা চাকু বের করে এক টানে সিনহার উপরের নিকাব+হিজাবটা খুলে ফেলে চাকুটা ওর গলায় ধরে....!!!
ইয়াদের এই ব্যবহার দেখে সিনহার বাবা-মা, সিনহা সবাই ভয় পেয়ে যায়....!!!

সিনহার বাবা:আরে,,কি করছ তুমি...!!! পাগল হলে নাকি....!!!

ইয়াদ:হুম আংকেল,, পাগলই হয়েছি আমি....!!! আজকেই আমাদের বিয়ে দিবেন আপনি।আমার বাসায় ফোন দিয়ে আমার গার্ডিয়ানদের আসতে বলেন।আর যদি বিয়ে না দেন তো আগে আমি আপনার মেয়েকে খুন করব।তারপর আমি নিজে সুইসাইড করব আপনাদের সামনেই☺

সিনহা:ইয়াদ,,ছাড়ো বলছি......😰

ইয়াদ:তুমি চুপ থাকো।

সিনহার বাবা:ইয়াদ....!!! কি করছ এসব....!!! ব্লাকমেইল করছ আমাদের....!!!

ইয়াদ:কি করছি না করছি সেটা বড় কথা না....!!! আমি ওকে ছাড়া বাচব না বাবা....!!! আমার কাছে লাস্ট এই একটা উপায়ই ছিল।আর কোনো উপায় নেই বাবা।এবার হয়তো ওকে পাবো।নয় ওকে খুন করে আমি নিজে মরব......!!!

বাবা:আচ্ছা ওকে ছাড়ো।তারপর তোমার বাবা মাকে ফোন দিয়ে যা করার করছি আমরা.....

ইয়াদ:না বাবা।সেটা আমি করব না।আমার চাকুর নিচে থেকেই ও কবুল বলবে।বিয়ে কমপ্লিট হওয়ার পরই ওকে ছাড়ব☺

বাবা:কি মসিবত রে বাবা...!!! এত পাগলামি কেন করছ...!!!

ইয়াদ:আপনাদের যা করতে বলছি সেইটা করেন।নইলে আল্লাহর কসম,,,আমি যা বলছি তা আমি করবই....

সিনহার বাবা আর কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি ইয়াদের বাসায় ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানালো।তারপর ইয়াদের বাসা থেকে  ওর বাবা,মা,ভাই আর এক চাচা আসলেন সিনহাদের বাসায়...!!!


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: