মঙ্গলবার

সুন্নত জিন্দার মিশন পর্ব ০৪ । Md Abdul Kaiyum

সুন্নত জিন্দার মিশন পর্ব ০৪

 Md Abdul Kaiyum

রিমাঃ : আচ্ছা একটা কথা বলুন তো..? আপনার তো এখন চাহিদা থাকার কথা কুমারী মেয়ে, যাকে কোন ছেলে স্পর্শ করে নাই. তাহলে আমার মত বিধবা কে কেন বিয়ে করলেন.?


:(কিছুক্ষণ নিরাবতার পর)
খালিদঃ জানেন আমার খুব ইচ্ছে নবীজি মৃত সুন্নত গুলোকে জিন্দা করা.এই যে আপনাকে বিয়ে করছি, আলহামদুলিল্লাহ্‌ অনেক গুলো সুন্নত জিন্দা হলো..
বিধবা স্ত্রী কে বিয়ে করা, এটা তো আমাদের দেশে এখন উঠেই গেছে... কোন ছেলেই বিধবাকে বিয়ে করতে চাই না. কিন্তু ইনশাল্লাহ আপনাকে বিয়ে করে আবার এই সুন্নত জিন্দা করতে চাইতাছি,
তাছাড়া আজকাল দিনেই কয় জনেই মসজিদে বিয়ে করে আমি করছি... আলহামদুলিল্লাহ্‌, এতে আরেক টা সুন্নত জিন্দা হলো..
এখন তো বিয়ের দোয়ার (আনুষ্ঠানিকতা) পর সবাই হাসি ঠাট্টা গান বাজনাতে ব্যস্ত কিন্তু কয়জনে খেজুর বিতরন করে, আলহামদুলিল্লাহ আমাদের বিয়েরর পর সবাইকে খেজুর খাওয়ানো হলো.
এই ভাবে আপনাকে বিয়ে করার কারনে আমি অনেক গুলো সুন্নত কে জিন্দা করলাম (আলহামদুলিল্লাহ্‌,) আর হযরতের ওলামায়ে কেরামের মুখে শুনছিলাম শেষ যমনায় নাকি একএকটা সুন্নত জিন্দা করা ১০০ টা শহীদের সমান সওয়াব পাওয়া যায়, আজকের দিনে এই আমল গুলোর কারনে আমি আশাবাদী আমার আমল নামায় অনেক অনেক সওয়াব যোগহবে ইনশাআল্লাহ..
এসব শুনতে শুনতে রিমা চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে, সে কিছুই বলতে পারছে না কান্নারর জন্য..
খালিদঃ জানেন আমার না অনেক সপ্ন, এই জাহিলিয়াত সমাজ ব্যবস্থার অমুল পরিবর্তন করে পুরো সুন্নতি সমাজ ব্যবস্থায় রুপান্তরিত করা. আপনি পাশে থাকবেন তো আমার এই বিপ্লবী মিশনে..?? কখনো যদি আমি ফ্যামিলি /সমাজে বাধার সম্মুখীন হই আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন নাতো।..?(কান্নামাখা কন্ঠে)
রিমা এসব শুনতে শুনতে আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে খালিদ কে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না কন্ঠে বলে ইনশাআল্লাহ এই বিপ্লুবী মিশনে আমি আপনার পাশে আছি, সবাই চলে গেলেও আমি যাবো না. ইনশাআল্লাহ..
২ জন দুজনকে জড়িয়ে ধরে অনেক্ষন কান্না করে..
কিছুক্ষণ পর খালিদ উঠে গিয়ে একটি প্যাকেট এনে রিমার হাতে দেয়...
খালিদঃ এই নিন এটা আমার পক্ষ থেকে আপনার জন্য হাদিয়া
রিমাঃ কি এখানে.??
খালিদঃখুলে দেখুন...
তারপর রিমা প্যাকেট টি খুলে দেখে তার ভিতরে ১টি তাজবিহ ১টি মেসওয়াক ১টি নামাজের মোসলা(জায়নামাজ)
রিমাঃ জাযাকুমুল্লাহ.. কিন্তু আমি তো কখনো মেসওয়াক ব্যবহার করিনি..??
খালিদঃ আগে কখনো করেন নাই তাতে কি আজ থেকে করবেন.. জানেন না এটা তো দায়েমী সুন্নত.. উম্মতের কষ্ট হবে দেখি নবীজি এটা বাধ্যতামূলক করেন নাই.. না হলে তো এটা ওযুর সময় করা বাধ্যতামূলক করে দিতেন.... কাল থেকে ইনশাআল্লাহ শুরু করবেন..প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও ইনশাআল্লাহ অভ্যাস হয়ে গেলে ভালো লাগবে..
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ.. কাল থেকে শুরু করবো...
খালিদঃ কিছু কিছু ছেলেরা এই সুন্নত পালন করলেও মেয়েরা এই সুন্নত থেকে পুরাপুরি গাফেল... তাই আপনার মাধ্যমে আবার এই সুন্নত আবার জিন্দা করতে চাই.
রিমাঃ ঠিক আছে আমি চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ
খালিদঃ আর ঐ তাকে একটি কোরআন মাজিদ ও আছে আপনার জন্য..
রিমাঃ জাযাকুমুল্লাহ .. আপনি অনেক ভালো..
খালিদঃ ইয়াওয়্যাকি, আপনিও অনেক ভালো..
কিছুক্ষণ নিরাবতার পর..
খালিদ : এই যে আপনার অধিকার (মোহরানা) তো আদায় করলাম . এবার কি আমার অধিকারটুকু আমায় করতে দিবেন...??
রিমা : কয়েক দিনের জন্য এই অধিকার থেকে বিরত থাকা যায় না.. (লজ্জা লজ্জা মুখে মাথা নিচু করে)
খালিদ ব্যাপারটা বুঝে ফেললো রিমা এখন হায়েজরত অবস্থায়.
খালিদঃ ঠিক আছে আপনি এইগুলো চেঞ্জ করে ঘুমিয়ে পড়ুন, আমি না হয় কিছু সময় মাওলার সাথে কথা বলে আসি.
রিমাঃআপনি কষ্ট পেয়েছেন.
খালিদঃ কেন কষ্ট পাবো..??
: এই যে আপনার চাহিদা মিটাতে পারেন নাই
: শুনুন আমি আপনাকে মোহরানা দিয়ে বিয়ে করেছি. কোন নিষিদ্ধ পল্লী থেকে ১ রাতের জন্য ভাড়া করে আনি নাই যে.. আজকেই সব আদায় করে নিতে হবে... আমি আপনাকে বিয়ে করেছি ক্ষনস্থায়ী ও চিরস্থায়ী জিন্দিগিতে এক সাথে থাকার জন্য.... এইগুলো শরীয়তের বিধান, এই সময় তো শরীয়াতে সহবাস করতে নিষেধ আছে.তাহলে কষ্ট পাবো কেন. যান আপনি ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন..আমি আসতাছি.
খালিদের প্রত্যেক কথা ওর আচরণ রিমা কে অবাক করে.ছেলেটি কত ভালো.. রিমা তার বান্ধুবিদের কাছ থেকে শুনেছে বাসর রাত্রে ছেলেরা নাকি তার জৈবিক চাহিদা মিটাতে ব্যস্তথাকে। মেয়েরা মানুষিক ভাবে প্রস্তুত কিনা বা শারিরিক ভাবে সুস্থ কিনা এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করে না.. ছেলেদের মনে হয় উনি যেন বিয়ে করেন নাই.. একটি মেয়েকে কিনে আনছে ব্যাস... উনি উনার চাহিদা মিটাতে ব্যস্ত... কিন্তু খালিদ তার পুরাপুরি বিপরীত, মাওলার দরবারে শোকর আদায় করে রিমা. তারপর ফ্রেস হয়ে খালিদের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে.
(চলবে ইনশাআল্লাহ)
শিক্ষা
১)হিংস্র প্রাণীর মত আপনার স্ত্রীর উপর আপনার পুরুষত্ব না দেখিয়ে উনার শারিরিক মানষিক অবস্থা বুঝার চেষ্টা করুন..
২) স্ত্রী হায়েজরত অবস্থায় স্ত্রী সহবাস শরীয়তে নিষিদ্ধ
৩) আহকামে যিন্দেগীতে হায়েজরত অবস্থায় স্ত্রীদের তুলনামূলক কম সৌন্দর্য পূর্ণ কাপড় পরিধান করতে বলা হয়েছে.
৪)বাসর রাতে সহবাস করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ।
যদি স্ত্রী সুস্থ থাকে ছলচাতুরী করে বাধা দেয় তাহলে স্ত্রী কবিরা গোনাহ করবে।
৫)স্ত্রীকে শরবত পান করানো সুন্নাহ
৬),একি পাত্রেদুধ পান করা সুন্নাহ
৭)স্ত্রীর মাথায় দুই হাত রেখে কল্যাণের দোয়া করা উত্তম
৮)দুইরাকাত শুকরিয়ার নামাজ পড়া উত্তম
(বিঃদ্রঃ ভুল থাকলে ধরিয়ে দিবেন ইনশাআল্লাহ ঠিক করে নিবো)
পূর্বের পর্বগুলো পেতে টাইমলাইনে খোজ করুন




শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.