শনিবার

#হুজুরের(______) #পঞ্চম_পর্ব_____

 #হুজুরের(______)
#পঞ্চম_পর্ব_____

"বিয়ের প্রথম দিনই আমি ওনাকে বলে দিতে পারতাম আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই ওনাকে ভালবাসি_______!!
"কিন্তু আমি বলি নি....
কারন আমি খুব ভালো করেই বোঝতে পেরেছিলাম আমার প্রতি ওনার বিন্দুমাত্র ভালোবাসা ছিলো না...
আর এতটুকুও মায়াও ছিলো না....
যেটা ছিলো সেইটা শুধুই ঘৃনা, আর ক্ষোভ!!
কারন ওনি এ বিয়েতে রাজী ছিলো না।
বাবা-মায়ের জন্য বাধ্য হয়েছিলো আমায় বিয়ে করতে!!!
আমার জন্যই ওনার স্বপ্ন পূর্ন হয় নি.....
তাহলে আমি কি করেই ওনার থেকে ভালো কিছু আসা করতে পারি...!!
" না তবে নিরাশ ও ছিলাম না....
ওনি পরক্রিয়ায় জড়িত জেনে কষ্ট হয়েছে তবে ভেঙে পড়ি নি.....
কারন আমি জানতাম এই মানুষ টা সেই মানুষ যাকে আমার রব আমার জন্য নির্ধারন করেছেন।
আমার রব তো এমন নয়, যিনি অন্তরের খবর জানেন না....
বরং তিনিই একমাত্র স্রষ্টা যিনি জানেন অন্তরের খবর........
আমার চাওয়া গুলো সবই তো আমার মালিক জানতো আর ওনি এমন নয় যিনি তার বান্দার কল্যান চান না...বরং ওনিই তো সর্বোত্তম কল্যানকারী।
"আমার রব যখন আমার প্রতিদিনের প্রার্থনা শোনে ওনাকে স্বামী হিসেবে দিয়েছেন.....নিশ্চয় এতেই রয়েছে আমার সর্বোত্তম কল্যান।
" তাই বিয়ের প্রথম দিনেই আল্লাহর ইচ্ছায় মনে মনে সংকল্প করে নিয়েছিলাম.........
"ওনি যতই অন্য নারার প্রতি আকৃষ্ট থাকুক না কেনো ইং শা আল্লাহ আমি ওনাকে ফেরাবোই....
কারন,আমার সাথে ওনার সম্পর্কটা স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা গড়ে দিয়েছেন......
আর অন্য মেয়ের সাথে হারাম প্রেম সেতো শয়তানের গড়ে দেওয়া!!
" আমি ওনাকে কখনই আটকে রাখি নি..বা একেবারে ছেড়েও দেইনি।
"কারন একটা রশি ও শক্ত করে ধরে রাখলে ছিড়ে যায়......
আর হালকা করলে পরে যায়.....আলহামদুলিল্লাহ তাই বেশি শক্ত ও করি নি বেশি ঢিল ও করি নি বরং এর মধ্যম পন্থা অবলম্বন করেছি!!!!
" যদি আমি বিয়ের প্রথম দিনই তাকে ভালোবাসি বলে চিৎকার করে কাঁদতাম তবুও এতটুকুও অনুগ্রহ ও পেতাম না তার থেকে বরং পেতাম লাঞ্ছনা!!!
কারন তখন তার মনে আমার জন্য এতটুকুও করুনা ছিলো না!!
"করুনাহীন লোকটার সামনে কাঁদা আর একটা পাথরের সামনে কাঁদা একই কথা!!
" একজন মানুষের সাথে কিছুকাল একটা প্রানী বাস করলেও তার প্রতি তার একটা মায়া তৈরী হয়........
সেক্ষেত্রে,, আমি তো মানুষ এগারোটা মাস ওনার সাথে থাকার ফলে আমার প্রতি ভালোবাসা তৈরী না হলেও ওনার এরটা মায়া তৈরী হয়েছিলে________
তাই হয়তো আমার কান্নায় ওনার মুখটা মলিন হয়ে ওঠেছিল।
"কিছুটা কষ্টও হয়তো হয়েছিলো......
কিন্তু সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পায়নি!!
"আমি ওনাকে সময় দিয়েছিলাম আমার প্রতি সহানুভবশীল হওয়ার জন্য। আমি ওনার সহানুভুতি করুনা অর্জন করার চেষ্টা করেছি....
" বল প্রয়োগ করি নি।
"সেদিন রাত টা ওনার স্তব্ধতা এবং আমার নীরব কান্নায় কেঁটে গেলো_______
"না....ওনি সেদিনের পর ও পরক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসে নি।
তাতে কি আলহামদুলিল্লাহ আমি আসা ছাড়ি নি।
কারন অন্য মেয়ের হয়তো অনেক রূপ রয়েছে ওনাকে কাবু করার জন্য_______
আমার তা না থাকলেও এ বৈধ্য সম্পর্ক টার মাঝে রয়েছে মহান রবের রহমত।
" আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো করেই জানতাম আল্লাহর রহমতের কাছে বিতাড়িত শয়তানের চক্রান্ত জয় লাভ করতে পারে না।
"ওনি যখন টাকনুর নিচে কাপড় পরতেন তখন আমি বলি নি_____
"টাকনুর উপরে কাপড় পড়ুন.......
বরং আমি ওনার কাপড়টা নিজ হাতে টাকনুর উপরে ভাজ করে দিয়ে বলতাম______
" আমি চাইনা কাল-কেয়ামতের দিন আপনি লাঞ্ছিত হোন। আপনি এত বড় ক্ষতিগ্রস্থ হোন যে দয়াময় আল্লাহ আপনার দিকে ফিরে না তাকান_________
"আর আপনি যদি এমন টা চান তবেই টাকনুর নিতে কাপড় পড়বেন!!
" নয় দিন নিজ হাতে ওনার প্যান্টের কাপড় টাকনুর উপর পর্যন্ত ভেঙে দিয়েছি...
"আলহামদুলিল্লাহ....
দশম দিন নিজেই তা ভেঙে নিয়েছে!!!
"সেদিন যখন ওনি তাড়াহুড়া করে সকালে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তখন আমি বলেছিলাম," ফেরার সময় আমার জন্য একটা জায়নামাজ, একটা তজবি, একটা সুরমাদানী ,আর বোরকা-হিজাব নিয়ে আসতে....
"এই প্রথম ওনার কাছে কিছু চাওয়াতে ওনি যতটা না অবাক হয়েছেন....তার থেকে বেশি অবাক হয়েছেন এমন জিনিস চাওয়াতে যা ঘরে পূর্বে থেকেই ছিলো।
" ওনি বললেন,"এ গুলো তো ঘরে আছে...!!
আমি বললাম," তবুও আপনি এনে দিবেন...দয়া করে....!!!
"ইং_শা_আল্লাহ....কারন টা এগুলো আনার পর বলবো......
" ওনি আর কথা না বলেই চলে গেলেন....
"রাতে এগুলো নিয়ে বাসায় ফিরলেন_____
আমার হাতে দিয়ে বললেন," এই নাও তোমার জিনিস।
এবার কারন টা বলবে তো....!!!
"আমি বললাম," ওছিলা হয়ে আপনি আমার ইচ্ছা পূর্ন করছেন.........
"মহান রব যেনো আপনার ইহকাল-পরকালে উত্তম বিনিময় দান করেন....
আমি বলি নি আপনার সকল আসা পূরন করুক......
বরং বলেছি," আমনার মনের সকল নেক আসা পূরন করুক আমিন!!
ওনি অবআক হয়েছিলেন কারন কাউকে কিছু দিয়ে এর আগে কখনই এনন দোয়া পান নি ওনি...
"অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন!!
আমি বললাম," আপনি জানেন, কেনো এগুলো আপনাকে আনতে বলেছি.....???
ওনি বললেন, "না" কেনো??
আমি বলি নি এগুলো আনলে যাতে আপনার সওয়াব হয় তার জন্যই আনতে বলেছি...
বরং আমি বলেছি, " আমি সঠিক ভাবে জানি না আপনি কয় ওয়াক্ত নামাজ পড়েন.....
তাই আমি চেয়েছিলাম আমি আমৃত্যু ওছিলা হয়ে আপনার আনা জায়নামায দিয়ে যত ওয়াক্ত নামাজ পড়বো আল্লাহ তা'আলা যেনো আপনাকে তত ওয়াক্ত কবুলি নামাজের সওয়াপ দেয়.......আর আপনি যেনো আমার এ আমল গুলোয় শরীক হতে পারেন এবং সম-পরিমান সওয়াব পান তার জন্যই আপনার হাত দ্বারা এগুলো আনিয়েছি!!
আল্লাহ আমার নিয়ত কবুল করুক..আমিন...
"আমার কথা শোনার পর আমি ওনার নিঃতব্ধতা খেয়াল করলাম....
ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম চোখেম কোনে অশ্রু বিন্দু........
হয়তো ওনার অ-জানতেই চলে এসেছে________
"পরের দিন ফজর এর সময় যখন ওনি মসজিদে যাচ্ছিলেন.....
তখন বললেন," তুমি এখন একা নামাব পড়তে ভয় পাও না...??
"বলি নি ভয় পাই না!!
বরং বলেছিলাম," তখন আমি ভয় পেতাম এটা ভেবে যে," আপনি ঘুমিয়ে থাকলে আর আমি ফজর নামাজ পড়লে।
নামাজ না পড়ার কারনে
আপনাকে না জাহান্নামের আগুনে পুড়ানো হয়....!!
"আমি কি করে ভয় না পেয়ে থাকতে পারতাম আপনাক এরূপ পরিনতির কথা চিন্তা করে বলুন...??
" আলহামদুলিল্লাহ... এখন তো আপনি নামাজ পড়েন তা হলে এখন আমি কেনো ভয় পাবো বলুন....???
"আমার কথা গুলো শুনে ওনি শুধু অবাক ই হোন নি...বরং এই প্রথম আমার হাত টা শক্ত করে ধরে বললেন_____

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: