#হুজুরের(____)
#চতুর্থ_পর্ব_____
"বিয়ের পর, আজ প্রথম নয় এরকম অনেক বার ওনাকে আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখেছি!!!
যতবারই জিজ্ঞাসা করেছি এভাবে তাকিয়ে থাকার কারন কি??
কোনো নির্দিষ্ট উত্তর পাই নি!!
জবাবে কিছুক্ষন নীরব থেকে প্রতিবারই বলেছে, "এমনি..........
বিশেষ কোনো কারন নেই......
" আর একটা কথা বলত," কি করে তুমি পারো!!
"এবার জিজ্ঞাসা করেও যে নির্দিষ্ট কোনো উত্তর পাবো না______
তা যেনেও জিজ্ঞাসা করলাম," এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো____???
" ওনি কিছুক্ষন নীরব থেকে লজ্জার হাসি দিয়ে বলল," আমি কিন্তু সিগারেট টা নিভিয়ে দেই নি বরং বারান্দায় গিয়ে________
"আমি ওনাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম," থাক আর বলা লাগবে না।
"মহান আল্লাহ তা'আলা আপনার দোষ গোপন রাখতে চান তবে আপনি কেনো তা প্রকাশ করে দিতে চান....???
"অবাক হয়ে বলল," আল্লাহ আমার দোষ গোপন রাখেন...!!
"আমি বললাম," জ্বী"
না হলে আপনার এমন অনেক অপ্রীতিকর বিষয় এর জন্য আপনি সকলের নিকট লজ্জিত হতেন______
তাই আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করে বলুন,"আলহামদুলিল্লাহ"
"ওনি বললেন,
"আলহামদুলিল্লাহ"____
" কথা শেষ হতে না হতেই ওনার ফোন টা বেজে উঠল________
"ওনি রিসিভ করতে ইতস্তত করছিলেন!!
আমার বোঝতে বাকী রইল না.....এটা কুসুমের কল...!!
" আমি রুম থেকে বেরিয়ে যাই নি বরং ওনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমি কি বাহিরে যাবো???
ওনি বললেন," না ঠিক আছে" এ কথা বলে নিজেই বারান্দায় চলে গেলেন।
"অনেক সময় ধরে বেশ উৎফুল্লতার সাথে ওনি মেয়েটির সাথে কথা বলতেছিল......
" ওনাকে দেখেই আমি বোঝতে পেরেছিলাম....দিন যত যাচ্ছে ওনিও মেয়েটির সাথে ততটাই জড়িয়ে পরছে। মন চায়নি বেহায়ার মত বাধা দিয়ে ওনাকে ফিরিয়ে আনি....
কিন্তু অন্তর এটাও চায় নি______
আমার বেখেয়ালের জন্য ওনি এত বড় পাপে জড়িয়ে পরুক.....
তাই সেদিনই ঠিক করলাম আজ রাতেই ওনার সাথে এ বিষয়ে কথা বলব।
"দিনের আলো ফুরিয়ে যখন রাত হলো.....
"যখন ওনার মেজাজ খিটখটে তখন নয় বরং যখন ওনার মেজাজ নরম থাকে আমি তখনই ওছিলা হিসেবে তাকে ভালো-মন্দ টা বোঝাতে চেষ্টা করি.....
" কারন গরম তেলে যত ঠান্ডা পানিই ঢালি তা ছেদ করে উঠবেই.....
যদি একটু সময় নিয়ে তেল টাকে ঠান্ডা হতে দেই তারপর যত গরম পানিই ঢালি তা ছেদ করে উঠবে না_________
"সেইদিন রাতে আলহামদুলিল্লাহ ওনার মেজাজ টা ঠান্ডাই ছিলো....
তাই আমি ওনাকে বললাম," আজ আমার বড্ড কুসুম নামের বোন টিকে দেখতে ইচ্ছে করছে আর তার সম্পর্ক জানতে ইচ্ছে করছে যদি আপনার আপত্তি না থাকে তবে দয়া করে আমাকে বোন কুসুমের একটা ছবি দেখাবেন..?
"আমার মুখে হঠাৎ কুসুমের কথা শুনে ওনি হতবাগ হয়ে গেলে____
কারন বিয়ের পর এই প্রথম আমি কুসুম সম্পর্কে ওনাকে জিজ্ঞাসা করছি .......
" কিছুক্ষন চুপ থেকে তারপর আমাকে মেয়েটির ছবি দেখালো.....
"মাশ_আল্লাহ দেখতে বেশ রূপবতী মেয়েটি তাই হয়তো নিজের বর কে ফিরাতে পারি না!!
" ছবিটা দেখতে দেখতে অ-জানতেই চোখ দুটো অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠল।
ওনি হয়তো তা খেয়াল করেই মোবাইল টা নিয়ে নিয়েছিল.....!!
"ওনি আমায় জিজ্ঞাসা করল," কাঁদছো কেনো??
আমি এ জন্যই দেখাতে চাই নি.. !!
"আমি বললাম ও কিছু না।
" আমায় একটু বলুন না আপনাদের আলাপ কিভাবে হয়েছিলো...??
"কিছুতেই বলতে রাজী হচ্ছিলো না হয়তো ভেবেছিলো আমার শুনতে খারাপ লাগবে তাই........
" তবুও সেদিন খুব জোর করায় বলেছিলো________
ওনি বললেন, " যখন আমি কলেজে পা রাখি ঠিক সেদিনই কুসুম কে দেখি....
সেদিনই ওর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি।
এবং সেদিনই ওকে প্রোপোজ করি...কিন্তু ও সেদিন কোনো উত্তর দেয়নি ঠিক দুদিন পর উত্তর দিয়েছিলে।
তারপর থেকে অনেক গুলো বছর অনেক গুলো সময় কাটিয়েছি.....
সেইদিন গুলো আজো স্মরনীয় হয়ে আছে....
ওনি আরো বললেন,' কুসুম আর ওনি মিলে সংসার করার অনেক স্বপ্ন দেখতেন এবং অনেক প্লান করতেন জিবন টাকে নিজেদের মত করে সাঁজানোর
...কিন্তু____
বলেই ওনার মুখটা মলিন হয়ে গেলো.....
চুপ করে গেলেন ওনি ।
আমি বললাম,"কিন্তু কই??
ওনি বললেন, "
বাবা-মায়ের জন্য ওনার সেই স্বপ্ন পূরন করতে পারেনি।
বাবা তাকে বাধ্য করেছে এই বিয়েটা করতে...
কথা গুলো বলেই যেনো এক বিশাল কষ্ট আর আক্ষেপে কাতর হয়ে গেলেন ওনি_______
"আমি নীরব শ্রোতার মত শুধু শোনেই গেলাম___
" তারপর বললাম, "আপনি আমায় ক্ষমা করে দিন আমার জন্যই আপনার স্বপ্ন পূর্ন হয়নি...
ওনি বললেন," এখন এসব কথা বাদ দাও.....
"এবার আমি বললাম," জানেন!!!
আমি কখনই কারো প্রতি আকৃষ্ট হয়নি...
কারন আমি খুব ভালো করেই জানতাম আমি অন্য কারো আমানত.....
"বিশ্বাস করতাম আমি যদি নিজেকে হেফাজত করে তার আমানত রক্ষা করি, তাহলে সেও আমার আমানত রক্ষা করবে..........
" আমি বলি নি আমি আপনার আমানত ঠিকই রক্ষা করেছি কিন্তু আপনি তা করেন নি।
বরং আমি বলেছি, আজ আমি খুব ভালো করেই বোঝতে পারছি সেদিন আমি ঠিক ভাবে আমার স্বামীর আমানত রক্ষা করতে পারি নি।
তাই আমার ভুলের জন্যই আপনি হয়তো_____!!?
"আপনি হয়তো জানেন না, যখন আপনি কুসুম কে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখতেন তখন আমি আমার প্রার্থনায় আপনাকে হেফাজতের জন্য দোয়া করতাম।
অনেক ব্যস্ততার মাঝেও থমকে যেতাম এটা ভেবে," মহান রব আমার সাথে যার জুড়ি লিখেছে সে মানুষ টা এখন কোন কাজে সময়টা ব্যয় করছে???
"আরো কিছু বলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো কিন্তু বলার শক্তি ছিলো না_____
আবেগে যেনো চোখ দুটো আজ বড্ড বেশিই অশ্রু ঝড়াচ্ছে_______
" ওনি অবাক হয়ে শুধু শোনছিলেন_______
"বলতে চাইনি কিন্তু অবশেষে বলেই ফেললাম," আমি সকল পরিবেশেই এতকাল আল্লাহর হুকুমে শুধু আপনার জন্যই নিজেকে হেফাজতে রেখেছি.......
"আমি বলিনি আমি তাকে খুব ভালোবাসি বরং বলেছি আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার জন্য আপনাকে খুব__________!!!
" ওনি বললেন খুব???
"আমি বললাম," ভালোবাসি.....!!!
"ওনি সেদিন খুব অবাক হয়েছিলেন.......
কারন বিয়ের এগারো মাস পর এই প্রথম তাকে আমি এমন কথা বলেছি।
এর মধ্যে একদিনও বলি নি...........
" আমি চাইলেই আরো আগেই বলতে পারতাম কিন্তু আমি বলি নি কারন ______