#নিয়তি( পর্ব--১৯)
লিখা--আসমা আক্তার পিংকি
।--- জানেন আমি না ওকে ডিভোর্স করতাম না যদি দেখতাম ও আমাকে সামান্য টুকু ভালোবাসে। কিন্তু ও আমাকে নয় বরং বিয়ের পর ও, এক মেয়ের সাথে রিলেশন চালিয়ে যাচ্ছিলো। বুঝতে পেরেছিলাম আমি মোহন আমাকে ভালোবাসেনা। তাই মুক্ত করে দিলাম, মুক্ত আকাশে ও উড়ে চলে গেলো একবার ও ফিরে তাকালোনা ।
.
.
.
নাজিফা নিশ্চুপ হয়ে যায়, ইমাদের দিকে চেয়ে দেখে ওর মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। ইমাদ, তাও একটু হেসে, নাজিফার দিকে চেয়ে বলে---- ভালোবাসতে ওকে খুব তাইনা????
----- কেউকে কারো ভালোবাসা পেতে হলে সেই মানুষটাকে অর্জন করতে হয়, ও তো আমাকে কখনোই অর্জন করতে পারেনি তাইতো আমি ও ওকে কখনোই ভালোবাসতে পারিনি, ওকে ছেড়ে চলে আসার সময় হৃদয়ে ব্যাথা অনুভব হয়নি, বুকের বা পাঁজরে কষ্ট লাগেনি, একবার ও পিছুটানে অনুতপ্ত হয়নি। সোডিয়ামের আলোয় কখনো একা হাঁটা হয়নি, সহজে দুঃস্বপ্ন ভেবে মানুষটাকে ভুলে গিয়েছি।
---- তাহলে আমি কেন মিতুকে ভুলতে পারচ্ছিনা ???
---- কারন আপনি তাকে ভালোবাসেন। অন্তরের সবটুকু অনুভূতি দিয়ে আপনি তাকে অর্জন করতে পেরেছেন , তাই মিতুকে আপনি কখনো ভুলতে পারবেন না। আর যেদিন মিতুকে ভুলে যাবেন সেদিন আপনি নিজেই বুঝে নিবেন আপনি ওকে কখনোই ভালোবাসেন নি তাইতো ওর অনুপস্থিতি আপনাকে ওকে ভুলিয়ে দিলো। কিন্তু তাই বলে চলে যাওয়া মানুষটার জন্য জিবন থমকে দেওয়া মানেই আপনি হেরে গেছেন, কিন্তু তাই বলে চলে যাওয়া মানুষটার জন্য অন্য কাউকে ভালোবাসতে না পারা মানে আপনি ভালোবাসার আসল সংজ্ঞায় জানেন না।
.
.
.
ভালোবাসা মানে প্রথম ভালোবাসাকে শ্রদ্ধার সাথে মনে রেখে পুরনো অনুভূতিতে আবার কাউকে ভালোবাসতে পারা ,আবার কেউকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা, আবার কাউকে নিয়ে কল্পনায় হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করা , কেননা জিবনে বাঁচতে হলে আপনাকে ভালোবাসতেই হবে , ভালোবাসা নামের চার অক্ষরের শব্দের সাথে জড়িত হতে হবেই।
---- না তা কখনোই আমার পক্ষে সম্ভব নয়, মিতু ছাড়া আমি আর কাউকে ভালোবাসতে পারবো না।
---- ইমাদ সাহেব বাস্তবতা দেখুন, আবেগে নিয়ে আর যাইহোক বাঁচা যায়না।
ইমাদ নাজিফার কথার আর কোনো উওর না দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
নিজের একরাশ আবেগ নিয়ে ছাদের উপর চলে যায়, আকাশের দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে রইলো, ওই নিশ্চুপ তারাগুলোর সাথে কথা বলতে লাগলো , কিন্তু ছেলেটি বুঝতে পারছেনা তারা গুলো যে নির্বাক এরা না ওর দুঃখ বুঝবে না ওর কষ্ট।
।
।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে নীল আকাশের কোনো এক পাশে মিতুর মুখটা খুঁজতে থাকে । হঠ্যাৎ মনে হলো কেউ একজন আলতো করে হাতটাকে স্পর্শ করছে। তাকাতেই দেখে নওরীন।
---- বাবাই ও বাবাই তুমি এতো রাতে ছাদে কি করছো????
----- তুই এখানে এসেছিস কেন????
---- ওই মে....
----- কি হলো??বল তুই এখানে কেন এসেছিস ???
---- বাবাই ওই মেয়েটি পাঠিয়েছে।
---- এরকুম বলতে হয়না মা, ওনি তো....
--- কি বাবাই, ওনি কি??? আচ্ছা বাবাই আমি ওনি কে কি বলে ডাকবো???
ইমাদ হাটু গেড়ে বসে,,,
---- তোর ইচ্ছে মা, তুই যেটা বলে ডাকবি।
---- বাবাই ওকে আমি মামুনি বলে ডাকি???
ও না আমার মায়ের মতো, বাবাই এই মামুনি টা অনেক ভালো, অনেক সুন্দর একেবারে পরীর মতো, আমাকে আর বোনকে অনেক ভালোবাসে, আর!!!
----- আর কি???
---- আর তোমাকে ও অনেক ভালোবাসে।
ইমাদ সহসা অট্টহেসে উঠলো --- ওনি আমাকে ভালোবাসে, যদি তাই হয়তো তাহলে তো এভাবে চলে যাওয়ার কথাই বলতোনা। যদি তাই হতো তাহলে এভাবে আমায় একা ফেলে যাওয়ার চিন্তাই করতো না।
---- কি হলো বাবাই তুমি কি ভাবছো???
----- না কিছুনা, আসলে তোর মামুনিটা সবাইকে ভালোবাসলে ও আমায় ভালোবাসে না।
নওরীন ধমক দিয়ে,,,,
..(চলবে)..
0 coment rios: